হাওরের ৪৪ শতাংশ ধান কৃষকের ঘরে : কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৩ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২০
ফাইল ছবি

ইতিমধ্যে হাওরের ৪৪ শতাংশ বোরো ধান কেটে কৃষক ঘরে তুলতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় কৃষিমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয়ের নানা উদ্যোগের ফলে হাওরের কৃষকেরা ভালোভাবে ধান কাটতে পারছে। ইতিমধ্যে ৪৪ শতাংশ ধান কর্তন করে ঘরে তুলতে পেরেছে। অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত বা আগাম বন্যা না হলে যে গতিতে ধান কাটা চলছে, আমরা আশাবাদী হাওরের কৃষকেরা সময়মতো ধান ঘরে তুলতে পারবে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'পরিবহন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা আমরা করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এসেছে। শ্রমিকের পাশাপাশি হাওর এলাকায় ধান কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে পুরোদমে ধান কাটা চলছে।'

'ব্রি-২৮ জাতের ধান আগে পাকে, এটি কাটা প্রায় শেষ হয়েছে। ব্রি-২৯ জাতের ধান এখনও পাকেনি, আরও ৭-৮ দিন সময় লাগবে।’

এ সময় তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন, জেলা পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং জেলা/ উপজেলা/ ইউনিয়ন কৃষি বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি কৃষিমন্ত্রী সামাজিক সচেতনতার ফলে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন-কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ, অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের ছাত্র-শিক্ষকসহ নানা পেশার মানুষ যারা ধান কাটায় এগিয়ে এসেছেন, কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুসারে, হাওরাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- এই সাতটি জেলায় এ বছর শুধু হাওরে চার লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে (২৪ এপ্রিল) পর্যন্ত ১ দশমিক ৯৮ লাখ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে, যা শতকরা ৪৪ ভাগ।

সিলেটে ৫৩ শতাংশ, মৌলভীবাজারে ৫৪ শতাংশ, হবিগঞ্জে ৩৭ শতাংশ, সুনামগঞ্জে ৪৮ শতাংশ, নেত্রকোনায় ৫৬ শতাংশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৬ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। হাওর এলাকায় তিন লাখ ৯২ হাজার ৪৪ জন শ্রমিক, ৩৫৯টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৪৪২টি রিপার ধান কর্তনের কাজে নিয়োজিত আছে বলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার বিষয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ইতিমধ্যেই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে। করোনার কারণে খাদ্য সংকটে পড়তে পারে পুরো বিশ্ব। দেখা দিতে পারে দুর্ভিক্ষও। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই করোনার মহামারির কারণে মন্দার হাত থেকে অর্থনীতিকে রক্ষায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও মজুত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় সেই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি, কৃষি উৎপাদন ও বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে পারব। দেশে খাদ্যের সংকট হবে না, তার জন্য যা যা করা দরকার, আমরা সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছি।

আরএমএম/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।