‘রোহিঙ্গাদের কেন বারবার বাংলাদেশকেই আশ্রয় দিতে হবে’
রোহিঙ্গাদের কেন বারবার বাংলাদেশকেই আশ্রয় দিতে হবে আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। মালয়েশিয়ায় আশ্রয় না পেয়ে আনুমানিক পাঁচশ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু এখনও গভীর সমুদ্রে ভাসছেন তাদের গ্রহণ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।
জাগো নিউজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগরের কাছে ভাসমান দুটি নৌকায় পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গাকে নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার জন্য আমাদের অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেত।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ‘এই মহাসাগরের চতুর্দিকে আরও অনেকগুলো রাষ্ট্র আছে। জাতিসংঘের আইন হচ্ছে এ ধরনের মানবিক দুর্যোগ হলে উপকূলবর্তী দেশগুলোর সমান দায়িত্ব ভুক্তভোগীদের দেখভাল করার। আমরা ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার গ্রহণ করেছি। সবসময় আমরাই কেন তাদের দায়িত্ব নেব?’
ড. মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের নয়, মিয়ানমারের নাগরিক। মিয়ানমারেরই প্রধান দায়িত্ব তাদের দেখভাল করা। নতুবা বাকি সবাই মিলে এদের দেখভাল করতে হবে। ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আমরা কী অন্যায় করেছি, যে দুনিয়ার বাকি রোহিঙ্গাদেরও আশ্রয় দিতে হবে? এটা কী ন্যায়বিচার?’
তবে একজন মানুষও সমুদ্রগর্ভে মারা যাক তা চাই না বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন বড় সংস্থা বা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যারা রোহিঙ্গাদের জন্য এত চিন্তিত তাদের হেড কোয়ার্টার যেসব দেশে, তারা অল্প কিছু রোহিঙ্গাকে নিয়েছে। আমাদের দেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আছে। তাদের প্রতি অনুরোধ আপনারা আমাদের দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যান।
ড. মোমেন বলেন, আমাদের পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, সম্পদও নেই। তবু আশ্রয় দিয়েছি। অথচ তিন বছর হয়ে যাচ্ছে, কোনো হিসাব নেই। এখন সময় বিশ্বের সবাই মিলে সব রোহিঙ্গার সুন্দর ভবিষ্যৎ দেয়ার।
তিনি বলেন, ‘এই মহামারির মধ্যে বিশ্বে যুদ্ধ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মিয়ানমার বোম্বিং করছে। ফলে আরও চার-পাঁচশ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকতে চায়। সেটা নিয়ে বিশ্বের কেউ কোনো কথা বলছে না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের লাখ লাখ শ্রমিক খেতে পারছে না। অনেকের চাকরি চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশ থেকে বেকার হয়ে কয়েক লাখ শ্রমিক ফেরত আসবে। সেসব নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে।’
জেপি/এমএফ/এমকেএইচ