পেটের দায়ে ফুটপাতে কিন্তু বিক্রি নেই
সেই ২৬ মার্চ থেকে শুরু, এখনও লকডাউন চলছে। দীর্ঘ লকডাউনে বসা হয়নি কিন্তু আর কতদিন? পেটের জ্বালা তো আর সহ্য হয় না, তাই বাধ্য হয়ে ফের ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসেছেন হকাররা। কিন্তু বেচাবিক্রি নেই। তাই শূন্য হাতেই ঘরে ফিরছেন অনেকে।
শুক্রবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের ফুটপাতে বেশ কয়েকজন হকার কাপড়সহ নিত্যপণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যেই তারা ক্রেতার আসায় পথ চেয়ে থাকেন। কিন্তু বেলা ১১টায় বসে দুপুর পর্যন্ত কেউ কোনো কাপড় বিক্রি করতে পারেননি।
জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় মিজানুর রহমান নামের এক হকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো কারও সাহায্য চাইতে পারি না, নিতেও পারি না। এতদিন জমানো টাকা খেয়েছি। এখন আর চলতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে দোকান নিয়ে বসেছি।’
তিনি দাবি করেন, ‘আমার কাছ থেকে আইডি কার্ড নেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য পাইনি। কেউ কেউ বলেছেন, রেশন কার্ড করে দেবে। কিন্তু কোনো কার্ডই পাইনি। কাগজ-নম্বর সব নিয়ে গেছে বাসা থেকে। কিন্তু কোনো খবর নাই।’
‘তাই বাধ্য হয়ে ফের ফুটপাতে বসেছি। কিন্তু কোনো ক্রেতা নেই, বিক্রিও নেই। এর আগেও খালি হাতে বাসায় ফিরেছি, হয়তো আজও ফিরতে হবে’- যোগ করেন তিনি।
সারাবিশ্বে মহামারি আকারে দেখা দেয়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৯ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ লাখ ২১ হাজার ১৭০ জন। এছাড়া মোট সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৪০০। বাধ্য হয়ে অধিকাংশ দেশই মানুষের গতিবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণে স্থানভেদে দীর্ঘ সময় লকডাউন আরোপ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও সরকারি ছুটির পাশাপাশি মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন আরোপিত হয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে। মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭০ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৫৭১ জন। ফলে দেশে মোট করোনারোগীর সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ২৩৮ জনে।
শুক্রবার (১ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
এইচএস/এমএআর/পিআর