আজানের আগেই মসজিদে মুসল্লিদের ঢল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ
জোহরের আজানের সময় হতে তখনও মিনিট দশেক বাকি। লালবাগের ঐতিহ্যবাহী শাহী মসজিদের ভেতরে তিন প্রবেশপথে জীবাণুনাশক স্প্রে হাতে দাঁড়িয়ে তিনজন মানুষ। ভেতরে দেখা গেল শতাধিক মুসল্লি। কেউ নামাজ পড়ছেন কেউ বা কোরআন তেলাওয়াত করছেন। তবে যারাই ভেতরে প্রবেশ করছেন হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করেই তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে।
আজারের আগেই এত মুসল্লি কেন জানতে চাইলে মসজিদের একজন বললেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ৬ এপ্রিল থেকে মসজিদে মুসল্লিদের অবাধ আগমন বন্ধ হয়ে যায়। প্রতি ওয়াক্তের নামাজে মাত্র পাঁচজন ও শুক্রবারের নামাজে (জুমা) ১০ জন এবং রোজার শুরুর পর ১২ জন নিয়ে তারাবিহর নামাজ হচ্ছিল। এক মাসেরও বেশি সময় পর আজ জোহরের নামাজের সময় থেকে শর্তসাপেক্ষে সকল মুসল্লির মসজিদে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার কারণে অনেকে আগেই মসজিদে এসে শোকরানা নামাজ পড়ছেন।
এসব মুসল্লিরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে সকাল থেকেই মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুনাশক সামগ্রী দিয়ে ধোয়ামোছা করেছেন। মসজিদের ফ্লোর থেকে কার্পেট তুলে নিয়েছেন। মসজিদে প্রবেশপথেই জীবাণুনাশক, স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে তবে প্রবেশ করানো হচ্ছে। আবার নামাজ শেষে মসজিদ ধোয়ামোছা করা হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) সকালে আজিমপুর কবরস্থান সংলগ্ন প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদ ও লালবাগের শাহী মসজিদ সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সকাল থেকেই মসজিদের চৌহদ্দিতে ধোয়ামোছা চলছে। দুটি মসজিদে এর আগে কার্পেট বিছিয়ে নামাজ পড়ানো হলেও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গতকালের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্পেট তুলে রাখা হয়েছে।
মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন এরশাদুল হক বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনেই তারা জোহরের ওয়াক্ত থেকে মুসল্লির জন্য মসজিদের প্রবেশপথ খুলে দেবেন। সকাল থেকেই তারা মসজিদ ধুয়েমুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখছেন। কার্পেটের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে-এমন আশঙ্কায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কার্পেট তুলে রাখা হয়েছে।
দীর্ঘ একমাসেরও বেশি সময়ের পর মসজিদে নামাজের ওপর বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বুধবার (৬ মে) মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, আজ জোহরের পর থেকে কিছু বাধ্যতামূলক শর্তাবলি মেনে মসজিদে ওয়াক্ত ও তারাবির নামাজ পড়া যাবে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনেই মসজিদে প্রবেশ ও প্রতি কাতারের পর নির্ধারিত জায়গা ফাঁকা রেখে নামাজ আদায় করছেন।
এমইউ/এসআর/পিআর