শিথিল লকডাউনে বাস ছাড়া সবই চলছে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশে চলছে সাধারণ ছুটি। গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত কয়েক দফায় এ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ সময়ে মানুষের চলাচল সীমিত করার পাশাপাশি সবকিছুই বন্ধ রাখ হয়েছিল। বলা চলে, সারাদেশ লকডাউনেই ছিল। বেশকিছু শর্ত দিয়ে এ লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে খুলে দেয়া হয়েছে গার্মেন্টস ও মসজিদ। শপিংমল খোলার ঘোষণাও দিয়েছে সরকার। এতে ঢাকার সড়কে বেড়েছে যানবাহন। বাস ছাড়া এখনই বলতে গেলে সব পরিবহনই চলছে ঢাকার সড়কে।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) আইইডিসিআরের হিসাব অনুযায়ী, মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৭০৬ জন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১২ হাজার ৪২৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১৯৯ জনের প্রাণ কেড়ে নিলো ভাইরাসটি।। যদিও রাজধানীর সড়কের চিত্র একদম উল্টো।
বৃহস্পতিবার সারাদিনই রাজধানীর প্রবেশপথ ও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অসংখ্য যানবাহন দেখা গেছে। কোথাও কোথাও দেখা যায় ক্ষণিকের যানজটও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত অঘোষিত লকডাউন শিথিলতার দিকে যাওয়ায় সড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
দিনভর রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর, কল্যাণপুর, শ্যামলী, নিউমার্কেট, তেজগাঁও, মহাখালী, যাত্রাবাড়ী ও গুলশান এলাকায় দেখা গেছে, গাড়ির চাপ। কোথাও কোথাও আবার সিগন্যালের কারণে কিছুক্ষণের জন্য সড়কে থমকে যাচ্ছে গাড়িগুলো।
প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও লেগুনার সঙ্গে রয়েছে মোটরসাইকেল। বাধাহীনভাবে চলছে ঢাকার চিরায়ত রিকশাও। জরুরি সেবা ওষুধ, কাঁচাবাজার, সরকারি প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যবিভাগ সংক্রান্ত যানবাহন তো আছেই। বলতে গেলে, বাস ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলছে।
ডিএমপির ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের তেজগাঁও এলাকার সহকারী কমিশনার কাজী মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘কিছু অফিস চলছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে। আজকের চিত্র গতকালকের চেয়ে ভিন্ন। গতকালের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা আজ বেশি।’
ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের মতিঝিল জোনের এডিসি তারেক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনায় লকডাউনের কারণে ট্রাফিকিং বলতে গেলে জিরো হয়ে গিয়েছিল। লকডাউনের কিছু শর্ত শিথিল করা হয়েছে। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকছে। যে কারণে দু-তিন দিন ধরে আবারও সড়কে যানবাহন বাড়ছে। এখন সড়কে স্বাভাবিক পরিস্থিতির তুলনায় ২০ বা ৩০ শতাংশ যানবাহন চলছে।’
যাত্রাবাড়ী এলাকার মাঠ পর্যায়ের এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির চাপ অনেক বেড়েছে। গার্মেন্টস খোলা, দোকানপাট খুলছে। কর্মজীবীদের তো আর আটকানো সম্ভব হচ্ছে না।
কথা হয় ফার্মগেটের একটি জেনারেল স্টোরের মালিক মনিরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘একটি দোকান চালাই। লকডাউনের কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউন শিথিল করায় দোকান খুলতে যাচ্ছি। কিন্তু কোনো কর্মচারী ঢাকায় নেই। একা একা দোকান চালাতে হবে। জীবন তো থেমে থাকে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাসম্ভব দোকান চালাতেই হবে।’
ট্রাফিক পূর্বের ওয়ারী বিভাগের এডিসি (পদোন্নতিতে এসপি) সাইদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাস্তার চিত্র বদলে যাচ্ছে। ট্রাফিক সদস্যরা নিয়মিত সিগন্যালগুলো তদারকির পাশাপাশি অহেতুক কোনো যানবাহন ও মানুষ যেন ঘোরাফেরা না করেন সেজন্য চেকপোস্ট পরিচালনা করছেন।’
জেইউ/এফআর/পিআর