২০ রোজার মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পূর্ণমজুরি পরিশোধের আহ্বান
করোনা দুর্যোগ চলাকালে সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ২০ রোজার মধ্যে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের পূর্ণমজুরি ও ঝুঁকি ভাতাসহ সব পাওনা পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় শ্রমিক জোটের নেতারা। মঙ্গলবার (১২ মে) জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের অন্যতম নেতা সাইফুজ্জামান বাদশা এবং শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, করোনা অভিঘাত মোকাবিলায় গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের পরেও গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদের পূর্ণমজুরি প্রদান না করে ৬০ শতাংশ বেতন প্রদানের চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে চলছে শ্রমিক ছাঁটাই এবং কারখানা লে-অফ। গত ২৬ র্মাচ সাধারণ ছুটি শুরুর পর থকেইে পোশাকসহ দেশের সব শিল্প এলাকার কারখানাগুলোতেই কম-বেশি শ্রমিক ছাঁটাই চলছিল। এ ধারাবাহিকতায় এখন র্পযন্ত সাড়ে আট হাজারেরও বেশি শ্রমকি ছাঁটাই করা হয়েছে। গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় গত ১০ এপ্রলি একদিনেই কাজ হারান ৪০৬ জন শ্রমিক। দেশের শিল্প এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে আশুলিয়া ও গাজীপুরে। এছাড়াও ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা আছে নারায়ণগঞ্জে। আশুলিয়ার মোট ৪৮টি কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বিজিএমইএ সদস্য কারখানা ৩৮টি এবং বিকেএমই এর সদস্য কারখানা পাঁচটি।
সীমিত আকারে কারখানা চালুর কথা বলা হলেও ব্যাপকভাবে এবং স্বাস্থ্য বিধি পুরোপুরি না মেনে কারখানা চালু করায় শ্রমিক নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পোশাক শ্রমিকরা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও সবসময় ছাঁটাই এবং কারখারা লে-অফ আতঙ্কে থাকছেন। কিন্তু করোনা প্রার্দুভাবকালে শ্রমকি ছাঁটাই এবং কারখানা লে-অফ না করার বিষয়ে সরকারের পরিষ্কার নির্দেশনা থাকলেও মালিকরা তা মানছেন না। তাই শ্রমিকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির মাধ্যমে শ্রমিক ছাঁটাই, লে-অফ, শ্রমিকদের পূর্ণমজুরি ও ঝুঁকিভাতার ব্যবস্থা করে অবিলম্বে এর অবসান করতে হবে। একই সঙ্গে ২০ রোজার মধ্যে গার্মেন্ট শ্রমিকদের পূর্ণমজুরি ও ঝুঁকিভাতাসহ সব পাওনা পরিশোধ করার দাবি জানান তারা।
জাতীয় শ্রমিক জোটের নেতারা বলেন, করোনা সংকটে শিল্প শ্রমিকসহ শহর ও গ্রামের সব ধরনের শ্রমিক-মজুর, শ্রমজীবী-কর্মজীবী-মেহনতী মানুষ, ভ্যানচালক, রিকশাচালক, ক্ষুদ্র কারবারি, হকার, দোকান-কর্মচারীসহ সীমিত আয়ের ও দিন আনে দিন খায় মানুষ তারা প্রায় সবাই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এই কর্মহীন শ্রমিকদের জন্য রেশন ব্যবস্থা চলু করতে হবে এবং নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করতে হবে। সরকার যে খাদ্য সহায়তার পদক্ষেপ নিয়েছে এবং যে তালিকা তৈরি হচ্ছে সেই তালিকায় খাদ্য সহায়তা প্রার্থী একজনও যেন বাদ না যায়, একজন মানুষকেও যেন অনাহারে থাকতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
এফএইচএস/এমএফ/জেআইএম