এপ্রিলের বকেয়া, মে মাসের ১৫ দিনের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবি
২৫ রমজানের মধ্যে এপ্রিলের বকেয়া বেতন, মে মাসের ১৫ দিনের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনঃমজুরিতে চাকরিতে পুনঃবহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ কনফেডারেশন অব লেবার (বিসিএল)।
বুধবার (১৩ মে) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।
শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মানববন্ধনে অংশ নেন বিসিএলের কর্মীরা। বিসিএলের সভাপতি সুলতানা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কোষাধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন সহিদ, সদস্য মো. বাহারানে সুলতান বাহার, আলমগীর রনি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধন বক্তারা বলেন, আগামী ২৪ মে ঈদ উদযাপন হবে। ঈদের আগে প্রতি বছরই ঈদের বোনাস নিয়ে গার্মেন্টস মালিকরা নানা ধরনের টালবাহানা শুরু করে। করোনাভাইরাসের আক্রমণে শ্রমিকরা যখন অর্ধাহারে, অনাহারে জীবনযাপন করছে, যখন ঠিকমতো মজুরি পাচ্ছে না তখন এই করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে মালিকরা ইতোমধ্যে শ্রমিকদের বোনাস না দেয়ার টালবাহানা শুরু করেছে। অনেক মালিক অযৌক্তিকভাবে কারখানা লে-অফ ও শ্রমিক ছাঁটাই করেছে, যা শ্রম আইনের অপপ্রয়োগ ও অমানবিক।
তারা বলেন, প্রতি বছর ঈদের আগে শ্রম মন্ত্রণালয়-মালিকরা সব পোশাকশিল্প শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। কিন্তু মালিকরা ঈদের ছুটির পূর্ব মূহূর্ত পর্যন্ত শ্রমিকদের বোনাস-বেতন পরিশোধ না করে শ্রমিকদের জিম্মি করেন। ঈদের আগ মুহূর্তে শ্রমিকরা যখন উদগ্রীব হয় তখন মালিকরা শ্রমিকদের বোনাস না দিয়ে বকশিশ হিসেবে কিছু টাকা আর আংশিক বেতন দিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করেন। শ্রমিকদের তখন আর প্রতিবাদ করার কোনো সুযোগ থাকে না। প্রতিবাদ করলেও উৎসবের আগে আইনশৃঙ্খলার অজুহাতে সরকার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না।
করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী মানুষ দুর্বিষহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে সংগঠনের নেতারা বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এ পরিস্থিতিতে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি অসহায়। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে কারখানা বন্ধ থাকলেও গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরির জন্য সরকার মালিকদের পাঁচ হাজার কোটির আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও শ্রমিকদের কত শতাংশ মজুরি দেয়া হবে তা নিয়ে চলছে নানা বিতর্ক এবং সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। এতে করে শ্রমিকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু কিছু কারখানা খোলার কথা থাকলেও কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করে মালিকরা ব্যাপকভাবে কারখানা চালু করেছে বলেও অভিযোগ করে বিসিএল।
সংগঠনটির নেতারা মানববন্ধনে বলেন, এতে করে শ্রমিক ও তাদের পরিবার স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। করোনাভাইরাসে অনেক শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারাও গেছেন। এ পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা ও মৃত্যুবরণকারী শ্রমিককে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ সব দায়িত্ব মালিকপক্ষকে নেয়ার আহ্বান জানান তারা।
এসআর/এমকেএইচ