চমেকসহ চট্টগ্রামের দুই হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৭:৪৬ পিএম, ২১ মে ২০২০

চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গতকাল একদিনেই সর্বোচ্চ ২৫৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় নগরবাসীর করোনা চিকিৎসায় নতুন করে প্রায় ৪০০ রোগীর সেবা দানে সক্ষম দুটি হাসপাতাল চালু হয়েছে চট্টগ্রামে।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার এ কে আজাদ, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বিসহ বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নেতারা।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষণ ও আইসোলেশন ইউনিট মিলিয়ে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আলাদা একটি ব্লকে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনা রোগীদের জন্য আলাদা ব্লক তৈরি করে চিকিৎসাসেবা দেয়া শুরু হয়েছে। শুরুতে ১০০ শয্যার পাশাপাশি ১০টি আইসিইউ শয্যা দিয়েই করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার শুরু করা হলো। তবে প্রয়োজনে ৩০০ শয্যার ব্যবস্থা করাও কঠিন হবে না চমেকের পক্ষে।’

এদিকে চট্টগ্রামের করোনা রোগীদের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় নতুন আঙ্গিকে চালু করা হয়েছে ১০০ শয্যার হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল। এতে ১১টি আইসিইউ বেডসহ সেন্ট্রাল অক্সিজেন, এসডিওসহ আনুষঙ্গিক সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘হলি ক্রিসেন্ট, জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিট-২ হিসেবে পরিচালিত হবে। রোস্টার করে এখানে সরকারিভাবে চিকিৎসক, নার্স ও জনবল কাজ করবে। ইতিমধ্যে এখানে ২০ জন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও বেশ কিছু ওয়ার্ডবয়, নার্স, স্টাফ নিয়োগ দেয়া হবে। চিকিৎসকরা ইতিমধ্যে তাদের কর্মস্থলে যোগদান করেছে। হাসপাতালটি একজন সহকারী পরিচালক বা তত্ত্বাবধায়কের অধীনে পরিচালিত হবে।’

এর আগে চট্টগ্রামে করোনা সংকট শুরুর পর থেকে গত দুই মাসে নগরের বেসরকারি হাসপাতালের কোনোটিকেই করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাজি করানো যায়নি।

বিকল্প হিসেবে পরিত্যক্ত হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালকে সংস্কার করে দেন তারা। কিন্তু এই হাসপাতালের পরিচালনা নিয়ে আবার দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ায় এতদিন করোনা রোগীর চিকিৎসা শুরু করা যায়নি সেটিতেও। সর্বশেষ হাসপাতালটিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালুর সিদ্ধান্ত হয়।

বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউসহ ১১০ শয্যা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল ইনফেকশাস ডিজিজেসের (বিআইটিআইডি) ৩০ শয্যা এবং বেসরকারি উদ্যোগে প্রস্তুত হওয়া চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের ৫০ শয্যাসহ মোট ২২০ শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। নতুন করে আজ আরও অন্তত ৪০০ করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা হলো।

ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘চমেকের পাশাপাশি ১০০ শয্যার হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালও খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে রেলওয়ে হাসপাতাল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জেনারেল হাসপাতাল ও বন্দর হাসপাতাল। এসব হাসপাতালের প্রতিটিতে ১০০টি করে সিট রয়েছে। তাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সমস্যা হবে না। ইতিমধ্যে আমরা নতুন চিকিৎসকও পেয়ে গেছি। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক থেকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক চিকিৎসক এবং পদায়নের জন্য অপেক্ষমাণ প্রয়োজনীয়সংখ্যক নার্স নিয়োগ করলে এসব স্বাস্থ্যসেবা চালু করা যাবে। তাই সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’

এফআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।