‘এইবার গরিবের ঈদ নাই, নতুন টাকার ব্যবসাও নাই’
‘এইবার গরিবের ঈদ নাই, তাই নতুন টাকার ব্যবসাও নাই। আমাগো বেশিরভাগ নতুন টাকার ক্রেতা গরিব গার্মেন্টস কর্মী, শপিংমল-মার্কেটের দোকানদার ও ভাসমান হকাররা। কেউ ঈদের বেতন বোনাস পেয়ে আবার কেউ রমজান মাসে ব্যবসা করে গ্রামে ঈদ করতে যাওয়ার সময় বাটা দিয়ে নতুন নোট কিনে নিয়ে যায়। গ্রামে গিয়ে পরিবার-পরিজন ও শিশুদের নতুন টাকা উপহার দেন। এটাই তাদের ঈদের বড় আনন্দ। কিন্তু এইবার করোনার কারণে কাস্টমার নাই বললেই চলে। করোনায় গরিব মরছে সাথে আমরাও।’
রোববার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তান মার্কেটের সামনে নতুন নোট সাজিয়ে বসে থাকা বিক্রেতা হারুন মিয়াকে এবার ব্যবসা কেমন জানতে চাইলে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অন্যান্য রমজানের ঈদের শেষ দিনে এটুকু কথা বলার ফুরসত মিলতো না। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকতো। ঈদের সময় একটু বেশি টাকা কমিশন দিয়ে হলেও টাকা কিনতে কেউ কার্পণ্য করতো না। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এখন রাস্তাঘাটে মানুষই নেই। হাজার হাজার মানুষের যেখানে দিনভর যাতায়াত হতো যে রাস্তায় সেই রাস্তায় এখন সুনসান নীরবতা। হাতে গোনা কয়েকজন নতুন টাকা কিনতে আসছে।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, গুলিস্তানের বেশ কয়েকটি জায়গায় কয়েকজন ব্যবসায়ী ১০০, ৫০, ২০ ও ১০ টাকার নতুন নোট সাজিয়ে বসে আছেন। ১০ টাকা ও ২০ টাকার নতুন নোট (১০০০ ও ২০০০ টাকা) নিতে শতকরা ৬ থেকে ৮ টাকা ও ২০ টাকা নোট নেয়ার জন্য ৮ থেকে ১০ টাকা কমিশন দিতে হচ্ছে। ৫০ টাকা ও ১০০ টাকার নোটের ক্ষেত্রে ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা কমিশন হাঁকা হচ্ছে। তবে যারা নতুন টাকা কিনতে আসছেন তারা ১০ টাকা ও ২০ টাকায় বেশি নিচ্ছেন।
রাজধানীর ঠাটারী বাজার থেকে পান-সিগারেট বিক্রেতা আবুল কালাম ৬০ টাকা কমিশন দিয়ে নতুন ১০ টাকার ১ হাজার টাকার একটি বান্ডেল কেনেন।
তিনি বলেন, এবার করোনার কারণে দেশের বাড়িতে ঈদ করতে যাননি। পরিস্থিতি ভালো হলে তিনি বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। তাই আগে থেকে নতুন টাকা কিনে রাখছেন।
এমইউ/এমএসএইচ