বেনাপোলে ১০ মিনিটে পণ্য শুল্কায়নের রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ২৮ মে ২০২০

দশ মিনিটে শুল্কায়ন, ৯ মিনিটে রিলিজ অর্ডার। শুল্কায়ন সময় হ্রাসে নতুন রেকর্ড। গত ১৯ মে ১৯ মিনিটে শুল্কায়ন থেকে রিলিজ অর্ডার পর্যন্ত কাজে এ রেকর্ড করে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বেনাপোল কাস্টম হাউস। বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এনবিআর জানিয়েছে, ভারত থেকে ২১টি রেল ওয়াগন বোঝাই ধানবীজ আমদানি হয়। ৭ লাখ ৭৫ হাজার কেজি (৭৭৫ টন) ধানবীজ। সম্ভাব্য খাদ্য সংকটরোধে ধানবীজ দ্রুত কৃষকের হাতে পৌঁছাতে নজিরবিহীন এ পদক্ষেপ নেন কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী।

এনবিআরের কেন্দ্রীয় কাস্টমস সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা ওয়াল্ডের তথ্য মতে, ধানবীজের ওয়াগনগুলো ১৯ মে সন্ধ্যা ৭টা ১৯ মিনিটে রেলওয়াগনে বেনাপোল রেলস্টেশনে পৌঁছে। রাত ১১টা ২৭ মিনিটে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সারথি এন্টারপ্রাইজ সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি রেজিস্ট্রেশন করে। ১১টা ৩৬ মিনিটে রাজস্ব কর্মকর্তা নঈম মীরন শুল্কায়ন অনুমোদন করেন।

৯ মিনিটে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট পরবর্তী সোনালী ব্যাংকে শুল্ককর জমা করেন। ১১টা ৪৬ মিনিটে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান রিলিজ অর্ডার প্রিন্টেড করেন।

সর্বসাকুল্যে ১৯ মিনিটে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে ১০ মিনিটে শুল্কায়ন ও পরবর্তী ৯ মিনিটে রিলিজ অর্ডার প্রিন্ট হয়।

রাজস্ব কর্মকর্তা নঈম মীরন বলেন, সমগ্র আমদানি প্রক্রিয়ায় এ টুকুই কাস্টমসের কাজ। শেষ ৯ মিনিট সময় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট টাকা জমা দিতে নিয়েছেন। সব ঠিক থাকলে ৫ মিনিটেও আমরা শুল্কায়ন করার দক্ষতা অর্জন করেছি। কাগজপত্র ঠিক থাকলে কেবল রেলকার্গো নয়, সব ধরনের চালানই দ্রুত শুল্কায়ন করা যায়।

আমদানি চালান বৃত্তান্তে দেখা যায়, ভারত থেকে দুইটি চালানে রাইসসীড (ধানবীজ) আমদানি হয়। ২১টি রেল ওয়াগনে ৭ লাখ ৭৫ হাজার কেজি (৭৭৫ মেট্রিক টন) ধানবীজ আমদানি হয়। ঢাকার গুলশানের বায়ার ক্রপসাইন্স লিমিটেড ভারতের বায়ার বায়ো সায়েন্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এসব বীজ ক্রয় করে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সারথী এন্টারপ্রাইজ বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে (সি-২১৯৯৩ ও ২১৯৯৪)। দি সিটি ব্যাংক গুলশান শাখায় এলসি খোলে। এসব বীজের শুল্ককর ৭৫ লাখ ৩৩ হাজার ৫০৮টাকা।

এনবিআর জানিয়েছে, রেলকার্গোতে আমদানি দ্রুত শুল্কায়ন, খালাস হয়। সময় ও খরচ সাশ্রয়ের সাথে পণ্য নষ্ট হয় না। পার্কিং সিন্ডিকেট মাঝপথে ট্রাক আটকে চাঁদাবাজি করতে পারে না। রেলকার্গোতে লকডাউন ও স্বস্থ্যবিধি মেনে আমদানি করায় করোনা ঝুঁকি থাকে না।

ট্রাক ও রেলকার্গোর তুলনা করে দেখা যায়, বর্তমান রেলকার্গোটি মাত্র সাড়ে ৩ ঘণ্টায় ভারত থেকে বেনাপোলে পৌঁছে। এক ওয়াগনে ৪ ট্রাকের সমান পণ্য আনা যায়। রেলকার্গোতে মিথ্যা ঘোষণার সুযোগ কম। ভাড়া ট্রাকের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। আবশ্যিক পার্কিং, ট্রাক অপেক্ষা ও চাঁদাবাজি নেই। দিনে ১০০ বগির একটি ট্রেন ৪০০ ট্রাকের সমান পণ্য আনতে পারে।

এনবিআর জানিয়েছে, ট্রাকে ধানবীজের এ চালানটি আমদানি হলে ৫ থেকে ৬ দিন লাগত খালাস পর্যন্ত। ৫০টির বেশি ট্রাকের প্রয়োজন হতো। ৫০ জন ড্রাইভার, একজন না এলে খালাস বন্ধ। বন্দরে ও রাস্তায় যানজট সৃষ্টির কারণ হতে। ট্রাকে একই চালানের ভাড়া দ্বিগুণেরও বেশি। প্রান্তিক ভোক্তা কৃষকের ব্যয় প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে যেত।

এমএএস/এমএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।