করোনা সন্দেহে অবরুদ্ধ ঘরে অমানবিক মৃত্যু, দোষীদের শাস্তির দাবি
ফেনীর সোনাগাজীতে করোনাভাইরাসের উপসর্গ জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাহাব উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি নিজ ঘরে অবরুদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
কমিশন মনে করে, অমানবিক ও নিষ্ঠুরভাবে সাহাব উদ্দিনকে সহযোগিতা না করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়। এমন অমানবিক আচরণের জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
বুধবার (৩ জুন) সন্ধ্যায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুর আগে পরিবারের লোকজন তাকে ঘরে একা রেখে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে রাখে। দেয়া হয়নি দুপুরের খাবারও। মৃত্যুর সময় পানি চেয়েও পাননি। মৃত্যুর পরও কাছে আসেননি স্ত্রী, ছেলে–মেয়ে ও জামাতাসহ কোনো স্বজন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর পাননি স্থানীয় মসজিদের খাটিয়া, কেউ দেয়নি কবর খোঁড়ার কোদালও। একজন মানুষ মৃত্যুশয্যায় আপনজনের কাছ থেকে এমন অমানবিক আচরণ পাবেন এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
করোনাকালে যে কেউ যেকোনো সময় এই অবস্থার শিকার হতে পারেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়াটা কোনো অপরাধ নয়। সবাকে দায়িত্বশীল ও মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানায় কমিশন।
পাশাপাশি তৃণমূলের জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের একটি পেট্রল পাম্পে চাকরি করতেন সাহাব উদ্দিন। জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৭ মে বুধবার নিজ বাড়িতে আসেন তিনি। শনিবার (৩০ মে) রাতে শরীর আরও খারাপ হলে রোববার (৩১ মে) দুপুরে নিজে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে আসেন। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা কথা বলা বন্ধ করে দেয়। সাহাব উদ্দিন দোতলা বাড়ির নিচ তলার একটি কক্ষে অবস্থান করলে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা ওই কক্ষের দরজার ছিটকিনি মেরে দ্বিতীয় তলায় চলে যায়। সেদিন রাতেই তার মৃত্যু হয়।
জেইউ/এফআর/এমএস