একদিনে সর্বোচ্চ ৩১৭১ করোনা রোগী শনাক্তের রেকর্ড

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:৪১ পিএম, ০৯ জুন ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হিসেবে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন হাজার ১৭১ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭১ হাজার ৬৭৫ জনে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৫ জনের। ফলে করোনায় মোট মারা গেলেন ৯৭৫ জন।

মঙ্গলবার (৯ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

দেশের মোট ৫৬টি ল্যাবের মধ্যে ৫৫টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ হাজার ৬৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো চার লাখ ২৫ হাজার ৫৯৫টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ১৭১ জনের মধ্যে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭১ হাজার ৬৭৫ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৫ জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ৯৭৫ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭৭৭ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১৫ হাজার ৩৩৬ জন।

নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ৩৩ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৮ জন, চট্টগ্রাম বিভা‌গে ১১ জন, সিলেট বিভাগে দুজন, রাজশাহী বিভাগে দুজন ও রংপুর বিভাগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বয়সের দিক থেকে ১১ বছ‌রের উ‌র্ধ্বে দুজন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী দুজন, ত্রিশোর্ধ্ব পাঁচজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৫ জন, ষাটোর্ধ্ব ১০ জন এবং সত্তরোর্ধ্ব আটজন মারা গেছেন।

গত সোমবারের (৮ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ জন মারা গেছেন, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। তার আগের দিনও সমানসংখ্যক রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। ১২ হাজার ৯৪৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৭৩৫ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও সংক্রমণ শনাক্ত শুধু বাড়েইনি, হয়েছে সর্বোচ্চ প্রাণহানি ও শনাক্তের রেকর্ডও। এর আগে, দেশে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ছিল দুই হাজার ৯১১ জনের, যা গত ২ জুনের বুলেটিনে জানানো হয়।

মঙ্গলবারের বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৬২ শতাংশ। রোগীদের মধ্যে সুস্থতার হার ২১ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৫৫৭ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১২ হাজার ৪২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২১৬ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন চার হাজার ৫৩৫ জন। এ প‌র্যন্ত আই‌সো‌লেশনে আ‌ছেন সাত হাজার ৮৯৩ জন।

দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১০৬ টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৬০২ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ছয় হাজার ২৭ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৩৬ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৪৯ হাজার ৩৮৯ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৬ হাজার ৬৩৮ জন।

দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

বরাবরের মতোই ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজের সুরক্ষা নিজের হাতে।

করোনাভাইরাসের ছোবলে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৭২ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা চার লাখ নয় হাজার প্রায়। তবে সাড়ে ৩৫ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস।

পিডি/এমইউ/এইচএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।