এক সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত বেড়েছে ১৮ সহস্রাধিক, মৃত্যু ২৪৯

রাজধানীসহ সারাদেশে শুক্রবার (১২ জুন) পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ একদিনে সর্বোচ্চ করানোভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে।
১১ জুন সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার (১২ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশের ৫৯টি ল্যাবরেটরিতে (রাজধানী ঢাকায় ২৯টি ও ঢাকার বাইরে ৩০টি) ১৫ হাজার ৯৯০টি নমুনা পরীক্ষা করে তিন হাজার ৪৭১ করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। একই সময়ে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত এবং ১৮ মার্চ রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর প্রথম মৃত্যু হয়। আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান অনুসারে আজই আক্রান্ত মৃতের সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের গত এক সপ্তাহে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ সহস্রাধিক এবং মারা গেছেন ২৪৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে গত ৬ জুন রাজধানী ঢাকার ২৭টি এবং ঢাকার বাইরে ২৫টিসহ সর্বমোট ৫২ ল্যাবরেটরিতে ১২ হাজার ৪৮৬টি নমুনা পরীক্ষা করে দুই হাজার ৬৩৫ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ওইদিন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজার ২৬ জন। ল্যাবরেটরিতে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরুর পর থেকে ৬ জুন পর্যন্ত মোট তিন লাখ ৮৪ হাজার ৮৫১ নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
এক সপ্তাহ পর ১২ জুন রাজধানীসহ সারাদেশে ৫৯টি ল্যাবে ১৫ হাজার ৯৯০টি নমুনা পরীক্ষায় তিন হাজার ৪৭১ নতুন রোগী শনাক্ত হয়। মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮১ হাজার ৫২৩ জনে।
গত ৬ জুন পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জনের মৃত্যুসহ মোট মারা যাওয়ার সংখ্যা ছিল ৮৪৬ জন। এক সপ্তাহ পর ১২ জুন পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জনসহ মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৫ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিভাগ।
এ পর্যন্ত সর্বমোট মারা যাওয়া এক হাজার ৯৫ জনের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৩১৯, ঢাকা বিভাগে ৩১৬, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৮৮, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৩, রাজশাহী বিভাগে ২৭, রংপুর বিভাগে ৩২, খুলনা বিভাগে ১৭, বরিশাল বিভাগে ২৯ এবং সিলেট বিভাগে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে অব্যাহতভাবে করোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী শনাক্তকরণ ও ভর্তি হওয়ার জন্য রোগীর ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রাজধানীসহ সারাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু হাসপাতাল ডেডিকেটেড করে দিলেও এখনো পর্যন্ত বেশকিছু হাসপাতালে রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা খরচ বেশি হওয়ায় সরকারি হাসপাতালে ওপর চাপ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ কমানো না গেলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়বে। সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার রাজধানীসহ সারাদেশে অধিক সংক্রমিত এলাকা চিহ্নিত করে রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন জোনে ভাগ করে পর্যায়ক্রমে লকডাউন শুরু করেছে।
এমইউ/এএইচ/পিআর