করোনা প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেলথ কমান্ড প্রতিষ্ঠার দাবি
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ন্যাশনাল হেলথ কমান্ড প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ ট্রাস্ট) এবং আর্ক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ওয়েবনারে এ দাবি জানান তারা।
গাইবান্ধা-১ এর সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির এ কে এম মাকসুদ, আর্ক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. রোমানা হক ওয়েবনারে অংশ নেন।
সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি স্বাস্থ্য বিশেজ্ঞদের হাতে নেই। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেজ্ঞদের সম্পৃক্ত করতে হবে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের পাশাপাশি অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্যও আইন করা প্রয়োজন। কেননা তামাক ব্যবহার করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। একটি বিষয় প্রথমে অনুধাবন করতে হবে চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মালিক নয়। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবার যেকোনো দায় চিকিৎসকদের ওপর আসে। সরকারের উচিত সকল বেসরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকা করে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার আওতায় নিয়ে আসা এবং করোনাকালীন সরকারের মাধ্যমে বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করা।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ে গবেষণা উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট কানিজ কান্তা এবং আইনজীবী তামান্না তাবাসুম।
তারা জানান, এ কথা স্বীকার করতে হবে যে, এই দুর্যোগে সাধারণ ছুটিতে বাংলাদেশ উন্নত কল্যাণকর রাষ্ট্রের মতো অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু সমন্বয় ও পরিকল্পনার অভাবে সাধারণ ছুটি বা লকডাউন প্রত্যাশিতভাবে কার্যকর হয়নি। সিএলপিএ ট্রাস্ট-র গবেষণা ও বিশ্লেষণে দেখা যায়, লকডাউনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হয়নি।
এ সময় গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নেতৃত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তৃণমূল হতে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবার সমন্বয়ের জন্য ন্যাশনাল হেলথ কমান্ড জরুরি।’
এ কে এম মাকসুদ বলেন, ‘আইনের বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় জনগণকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। করোনা কিছু বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি করে, গবেষণার মাধ্যমে ওই বিষয়গুলো তুলে এনে আইনটি সংশোধন করা জরুরি।’
ড. রোমানা হক বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবাকে বিকেন্দ্রীয়করণ করা উচিত। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়িত করতে হবে। স্বাস্থ্য সেবায় একটি রেফারেল ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।’
পিডি/এমএসএইচ/জেআইএম