করোনা দুর্যোগ কাটলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হলি আর্টিসানের শুনানি

মুহাম্মদ ফজলুল হক
মুহাম্মদ ফজলুল হক মুহাম্মদ ফজলুল হক , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৪ পিএম, ০১ জুলাই ২০২০

রাজধানীর হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া দণ্ডের আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিছুদিনের মধ্যে এই পেপারবুক বিজি প্রেস থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছাবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে করোনা দুর্যোগের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হাইকোর্টের নিয়মিত আদালতে আপিল শুনানির পদক্ষেপ নেবে রাষ্ট্রপক্ষ।

২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ৭ আসামির ডেথরেফারেন্স ও মামলার নথি হাইকোর্টে পৌঁছে। এরপরই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন।

নিয়মানুযায়ী পেপারবুক প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আসবে। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ঠিক করবেন।

পেপারবুক তৈরির অগ্রগতি কেমন এবং মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়াগত বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘আশা করি, কিছু দিনের মধ্যেই বিজি প্রেস (সরকারি ছাপাখানা) থেকে পেপারবুক তৈরি করে পাঠালে আমরা সেটি পাব। এরপর আপিল শুনানির পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

হাইকোর্টের আপিল শুনানির বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড সারাবিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছিল। এই মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য আমরা পদক্ষেপ নেব। মহামারি করোনা দুর্যোগ কেটে গেলে নিয়মিত আদালতে মামলাটি আপিল শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করার পদক্ষেপ নেব। মামলাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেন দ্রুত শুনানি করা যায়, তারই প্রচেষ্টা করব।’

রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর হলি আর্টিসানে হামলার মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক আসামিকে খালাস দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন—মূল পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশও দেন আদালত। রায়ে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান নামে এক আসামিকে খালাস দেয়া হয়।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় দুইজন পুলিশ সদস্যসহ ২২ জন নিহত হন। অভিযানে পাঁচ জঙ্গিও নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন বিদেশি নাগরিক।

হলি আর্টিসান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার দু বছর পর ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও তাদের মধ্যে ১৩ জন বিভিন্ন অভিযানে নিহত হলে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর অভিযোগপত্র গঠন করেন আদালত। এরপর মামলার শুনানি শুরু হয়। মামলায় মোট ১১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

এফএইচ/জেডএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।