বিদ্যুৎ প্রকল্পে মালামাল টানছে চালকবিহীন ৯৬ চাকার ট্রাক
‘মাতারবাড়ি ২x৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার’ প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বন্দরের অয়েল অ্যান্ড হেভি ইকুইপমেন্ট জেটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ জেটিতে গত ২৯ ডিসেম্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে ভিড়েছে প্রথম জাহাজ ‘ভেনাস ট্রায়াম্ফ’। জাহাজ থেকে মালামাল খালাস করতে ব্যবহার করা হচ্ছে চালকবিহীন বিশেষ ধরনের একটি ট্রাক।
সম্প্রতি মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গিয়ে সেই চালকবিহীন ট্রাকের কার্যক্রম দেখতে পায় জাগো নিউজ।
সেখানে কর্মরত এক প্রকৌশলী জানান, বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানি থেকে চালকবিহীন ট্রাকটি নিয়ে এসেছে। এটি রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে চালানো হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য যেসব ভারী মালামাল আসবে সেগুলো খালাস করে স্থানান্তরের জন্য এটি ব্যবহার করা হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ট্রাকটি চলে যাবে।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঘুরে দেখার সময় কেন্দ্রের অয়েল অ্যান্ড হেভি ইকুইপমেন্ট জেটিতে নোঙর করা ভেনাস ট্রায়াম্ফের সামনেই অবস্থান করতে দেখা যায় বিশেষ ধরনের এই ট্রাকটি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাকটি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাচ্ছিল, রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ট্রাক চালানোর সময় সামনে-পেছনে-পাশে ছয়-সাতজন প্রকৌশলী থাকেন। যারা ট্রাকটি চলার সময় এর গতিপ্রকৃতির খেয়াল রাখেন এবং আশপাশের অন্যান্য যানবাহনকে নির্দেশনা দেন।
চার কোণা লম্বা আকৃতির এই ট্রাকটির বডি নেই। উপরের অংশ অনেকটা বিমানের ডানা আকৃতির, যাতে সাদা রঙের লম্বা কয়েকটি পাত বসানো। লাল রঙের নিচের অংশটুকু ম্যাচের মতো চ্যাপটা আকৃতির। চাকার ওপর পাতটা কয়েক ইঞ্চি পুরু। পাতের নিচের ১২ সারিতে ৯৬টি চাকা বসানো হয়েছে। সামনের ইঞ্জিনটাও চ্যাপটা বক্সের মতো।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে মোট খরচ হচ্ছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তার মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি তিন লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
মাতারবাড়ি আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে চালকবিহীন ৯৬ চাকার ট্রাক আনা হয়েছে। এ ধরনের ১৮০ চাকারও ট্রাক আছে। এমন ট্রাক বাংলাদেশে আগে আর দেখা যায়নি। এ প্রকল্পে যা কিছু ব্যবহার হচ্ছে তার সবই অত্যাধুনিক।’
পিডি/এমএএস/ইএআর/সায়ীদ আলমগীর/এমএসএইচ/এইচএ/এমকেএইচ