আইসিডিডিআর’বিতে বাড়ছে রোগীর ভিড়
রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) হাসপাতালে বাড়ছে রোগীদের ভিড়।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ২৪ ঘণ্টায় আইসিডিডিআর’বিতে মোট ৫৯১ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হন। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২০০ জন।
করোনা মহামারির সময়ে রোগীর সংখ্যা গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন হলেও বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় চারগুণ, অর্থাৎ প্রায় ৬শ’ রোগী ভর্তি হচ্ছে।
সরেজমিনে আইসিডিডিআর’বি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং আশপাশের জেলা-গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ এবং মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, এবং প্যাডেলচালিত রিকশাযোগে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে
আইসিডিডিআর’বিতে ছুটে আসছেন স্বজনরা। ভর্তি রোগীদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি।
হাসপাতালের প্রবেশের পর আঙ্গিনায় অভিভাবকরা রোগীদের ভর্তি করতে লাইনে দাঁড়িয়ে বা বসে অপেক্ষা করছেন। করোনার কারণে প্রায় সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরে আছেন। কেউ কেউ হাসপাতালের তাঁবুর বাইরে ওয়াকওয়েতে মাদুর বিছিয়ে ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছেন।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থেকে শিশু পুত্রকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছেন তানভীর আহমেদ। ছেলেকে কোলে নিয়ে ভর্তির জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি জানান, তার ছেলের গত চারদিন যাবত ডায়রিয়া ও বমি হচ্ছে। বর্তমানে ডায়রিয়া কিছুটা কমলেও বমি বন্ধ হচ্ছে না। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে এখানে নিয়ে এসেছেন।
অপরদিকে গাজীপুর থেকে দুই বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে এসেছেন নয়নী নামের এক মা। আর লাইনে দাঁড়িয়ে শিশুটিকে পানি খাওয়াচ্ছিলেন বাবা।
নয়নী জানান, চারদিন যাবত অনবরত বমি ও পাতলা পায়খানা হচ্ছে মেয়ের। ওরস্যালাইন কিনে খাওয়ালেও সুস্থ হচ্ছে না। শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ছে তাই এখানে নিয়ে এসেছেন।
বনশ্রী ফরাজি হাসপাতাল থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন আরেক মা। ত্রিমোহিনীর বাসিন্দা এই মা জানান, শনিবার দিবাগত রাত থেকে অনবরত বমি ও পাতলা পায়খানা হচ্ছে মেয়ের। স্থানীয় ফরাজি হাসপাতালে ভোর সাড়ে ৫টায় ভর্তি করান। বমি ও পাতলা পায়খানা বন্ধ না হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকরা আইসিডিডিআর’বিতে দ্রুত নিয়ে ভর্তি করার পরামর্শ দেন।
হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও রোগী বৃদ্ধির এ হারকে স্বাভাবিক বলছেন আইসিডিডিআর’বির প্রধান চিকিৎসক প্রদীপ কুমার বর্ধন।
তিনি বলেন, করোনার সময়ে রোগীর সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০ জনে নেমে গিয়েছিল। এখন রোগীর সংখ্যা বাড়লেও অন্যান্য বছর এ সময়ে এমন সংখ্যক রোগী থাকে। ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। সুতরাং বিশুদ্ধ পানি পানের প্রতি নগরবাসীকে গুরুত্ব দিতে হবে।
শিশুদের ক্ষেত্রে ছয়মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ ও এরপর দুধের পাশাপাশি পরিপূরক খাবার। কৌটার দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকা, টয়লেট থেকে আসার পর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ সাধারণ নিয়মগুলো মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
এমইউ/জেডএইচ/জেআইএম