মায়ের কাছে যেতে চায় বাবা-মা হারানো শাকিরা
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল মেডিকেলের সামনের সড়কে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে মা-বাবা ও নানাকে হারানো আহত শাকিরা আক্তার হাসপাতালে থাকতে চাচ্ছে না। বার বার মায়ের কাছে যেতে চাচ্ছে অবুঝ শিশুটি। শিশুটি এখনো জানে না তার বাবা-মা বেঁচে নেই।
শিশুটি বলছে, ‘আমার আর এখানে ভালো লাগছে না, আমাকে বাড়ি নিয়ে যাও। আমি মায়ের কাছে যাবো।’
শুক্রবার (২১ জনুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে মাতুয়াইল মেডিকেলের সামনের সড়কে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।গুরুতর আহতাবস্থায় সিএনজিচালকসহ পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একই পরিবারের তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতরা হলেন- আব্দুর রহমান (৬৫), শারমিন (৩৮) ও রিয়াজুল ইসলাম (৪৫)। আহত হন সিএনজিচালক রফিক (৫০) ও পাঁচ বছরের শিশু শাকিরা আক্তার।
শিশুটির মামা নজরুল ইসলাম ও মামি মোছা. সোনিয়া আক্তার বলেন, শাকিরা আর হাসপাতালে থাকতে চাচ্ছে না। তার এখানে ভালো লাগছে না। শুধু মায়ের কাছে যেতে চায়।
নজরুল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবারে বরিশালের বাবুগঞ্জ চরফতেপুর গ্রাম থেকে আমার মা সাহিদা বেগমকে (৫৫) দেখার জন্য বাবা আব্দুর রহমানের সঙ্গে বোন, দুলাভাই ও পাঁচ বছর বসয়ী ভাগনিকে নিয়ে প্রথমে আমার বাসায় আসে, সেখান থেকে তারা মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রওনা দেয়। কিন্তু অটোরিকশাটি কিছু দূর এগোতেই যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার বাবা, বোন ও দুলাভাইকে মৃত ঘোষণা করেন। আর ভাগনিকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু এখন ভাগনি আর হাসপাতালে থাকতে চাচ্ছে না, ও শুধু ওর মায়ের কাছে যেতে চায়।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাগনি আগের তুলনায় ভালো আছে, সামান্য মাথায় আঘাত পেয়েছিল। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) চিকিৎসকের সঙ্গে বাসায় যাওয়ার বিষয়ে কথা বললো। চিকিৎসক যে সিদ্ধান্ত দেবে সেইভাবে ওই চিকিৎসা চলবে।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জাগো নিউজকে জানান, বাবা-মা ও নানাকে হারানো শিশু শাকিরার অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। শিশুটিকে যেকোনো সময় ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।
এমএএইচ/জিকেএস