ডিমভর্তি ভ্যানকে ধাক্কা দিয়ে চট্টগ্রামে পালান পিকআপচালক

রাজধানীতে দোকানে দোকানে ডিম সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন নূর আলম। তেজগাঁও রেলস্টেশনের পাশে ছোট একটি রুমে পরিবার নিয়ে থাকতেন। প্রতিদিনের মতো তেজগাঁও থেকে ডিম নিয়ে ভ্যানে করে যাচ্ছিলেন জিনজিরা। কিন্তু একটি পিকআপ তার এই লড়াই থামিয়ে দেয়। পিকআপের ধাক্কায় ভেঙে যায় সব ডিম। আর ঘটনাস্থলেই মারা যান নূর আলম।
রাজধানীর বেইলি রোডে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর পিকআপচালক জসিম উদ্দিন (৩২) পালিয়ে যান। এরপর তিনি তার কোম্পানি কর্তৃপক্ষের পরামর্শে চট্টগ্রামে বন্ধুর বাসায় আত্মগোপন করেন।
ঘাতক পিকআপটি
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি ভোরে বেইলি রোডে একটি সিমেন্ট কোম্পানির পিকআপ বেপরোয়া গতিতে এসে ডিম বহনকারী দুটি ভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ভ্যানচালক তুহিন (৩০) রাস্তায় ছিটকে পড়ে আহত হন। আর দ্বিতীয় ভ্যানচালক নূর আলম (৩৩) পিকআপের নিচে চাপা পড়ে মারা যান।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বুধবার (২৬ জানুয়ারি) র্যাব-৩ ও র্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে চট্টগ্রামের চাঁদগাও এলাকা থেকে ঘাতক পিকআপচালক জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার জসিমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে গাবতলীর ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ইট-বালু বহনকারী ট্রাক চালাতেন। চলতি মাসের প্রথম দিকে একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে মাসিক আট হাজার টাকা বেতনে পিকআপচালক হিসেবে যোগদান করেন।
গত ২৩ জানুয়ারি রাতে সিমেন্ট ভর্তি পিকআপটি নিয়ে মুন্সিগঞ্জ থেকে উত্তরায় যান। সিমেন্ট নামিয়ে ফেরার পথে ২৪ জানুয়ারি ভোরে বেইলি রোডে দুইটি ডিমবোঝাই ভ্যানে সজোরে ধাক্কা দিলে নূর আলম মারা যান।
এসময় পিকআপটি রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান জসিম। এরপর সেই সিমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কোম্পানি কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তিনি চট্টগ্রামে পালিয়ে বন্ধুর বাসায় আত্মগোপন করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১০ বছর ধরে ট্রাক চালিয়ে আসলেও জসিম ২০১৮ সালে লাইসেন্স করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি ওই কোম্পানির সংশ্লিষ্টতা পান তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে।
টিটি/জেডএইচ/জিকেএস