১১৬ আলেমের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন নিয়ে সংসদে প্রশ্ন

দেশের ১১৬ জন আলেমের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেওয়া গণতদন্ত কমিশনের টাকার উৎস জানতে চেয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। রোববার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই কমিশনের টাকার উৎস জানতে চান।
ফিরোজ রশীদ বলেন, হঠাৎ করে দেখলাম গণতদন্ত কমিশনের নামে একটি সংগঠন, যাদের কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি নেই, সাংবিধানিক ভিত্তি নেই, তারা ২২’শ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন দাখিল করলো দেশের ১১৬ জন আলেমের নামে। তাদের কাছে কী আছে? এই আলেমদের কি ঢাকা শহরে কোনো বাড়িঘর আছে? ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বারিধারা- কোথায় তাদের বাড়ি? লক্ষ্য লক্ষ্য, হাজার হাজার কোটি টাকা তারা কোথায় পাচার করছেন? মানি লন্ডারিং মামলা তাদের বিরুদ্ধে কেন হবে?
তিনি বলেন, এই যে খোঁচা দেয়, সামনে আমাদের নির্বাচন। এদের (গণতদন্ত কমিশন) পেছনে কি লোক আছে? এদের পিছে কি ভোট আছে? এরা ২২’শ পৃষ্ঠার একটা প্রতিবেদন করলো। সারাদেশে ঘুরলো এই করোনার মধ্যে দুই বছর- এই টাকাটা তারা কোথায় পেলো? এই টাকার উৎস কোথায়? এইটাও আমরা জানতে চাই।
তিনি বলেন, বাজেট পড়ে বলা যায়, সুখে থাকা মানুষগুলো বোঝে না গরীবের দুঃখ-কষ্ট কী; স্বপ্ন দেখা মানুষগুলো বোঝে না বাস্তবতা কত নির্মম, কত কঠিন। অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত বিচক্ষণ ব্যক্তি। একজন স্বনামধন্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। প্রথম শ্রেণীর ধর্ণাঢ্য শিল্পপতি। সর্বোপরি উনি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী। যেকোনো জটিল হিসাব ওনার কাছে মিলিয়ে দেওয়া অত্যন্ত সহজ। এই বাজেটেই তার প্রতিফলন আমরা দেখলাম। অর্থমন্ত্রী এই বাজেটে তেল আর জল এমন সুক্ষ্মভাবে মিশিয়েছেন যে, তা আর আলাদা করা সম্ভব নয়। ধনীদের চেহারা সামনে রেখে উনি এই বাজেট প্রণয়ন করেছেন। ওই সময় মনে হয় ওনার কাছে গরীবের অংকটা একদমই ছিল না।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা রক্ষা সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করে তিনি বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আজ লুটেরাদের দখলে চলে গেছে। এ খাতে অবাধ লুটপাট চলছে। মনে হয় কেউ দেখার নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সংস্থাগুলো নীরব।কীভাবে পি কে হালদার আট হাজার কেটি টাকা নিয়ে দেশের বাইরে চলে গেলেন? বছরের বছর বছর এই টাকা তিনি চুরি করেছেন। এটা তো একদিনে হয়নি। এসব প্রতিষ্ঠানে তো নিয়মিত অডিট হয়, তাহলে এতগুলো টাকা গেলো কীভাবে? ছয়জন বান্ধবীকে নিয়ে ১৩৩ বার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। কারো চোখে পড়েনি? দেশের টাকা বিদেশে গেছে। এই টাকা তো ফিরবে না।
তিনি বলেন, এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে টাকা নেন। আবার ওই ব্যাংকের পরিচালন নেন এই ব্যাংক থেকে। একে অপরের সঙ্গে যোগজাশসে এটা করছেন। কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না।
এই জাপা নেতা বলেন, পদ্মা সেতু কোনো রাজনৈতিক আইটেম নয়। রাজনৈতিক বিষয় নয়। এটি গোটা বাঙালি জাতির গর্ব ও অহংকারের বিষয়। এই সেতু নির্মাণ করে গোটা পৃথিবীকে আমাদের আর্থিক শক্তি ও সক্ষমতার বার্তা এরই মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের সব থেকে বড় গৌরবের বিষয়।
কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের কাছে হিরকের চেয়েও বেশি মূল্যবান। এই পদ্মা সেতুতে বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা টোল আদায় হবে। টাকা আদায়ের উৎস হিসেবে পদ্মা সেতু তৈরি হয়নি। জনগণের অর্থে, জনগণের কল্যাণের জন্য, জনগণের স্বার্থে পদ্মার ওপারের ৩ কোটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য এই পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী আমাদের উপহার দিয়েছেন।
এইচএস/ইএ/জিকেএস