নয়াপল্টন মসজিদ থেকে বের হতে মুসল্লিদের ভোগান্তি

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন নয়াপল্টন মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বের হতে গিয়ে পড়েছেন বাধার মুখে। এর ফলে নামাজ শেষে বিপরীত গলির বাসিন্দারা গেট দিয়ে বের না হতে পেরে ক্ষোভ জানান। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজ শেষে তৈরি হয় এই পরিস্থিতি।
এসময় মুসল্লিরা অভিযোগ করেন, আজকে শুক্রবারে মুসল্লিদের অনেককে নামাজে আসতে দেয়নি। যারা কষ্ট করে মসজিদে এসেছে, তাদের বের হতে দিচ্ছে না। পবিত্র জুমার দিনে এসব মানা যায় না।
সকাল থেকে ওই এলাকায় দেখা গেছে, আগামীকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিএনপি ঘোষিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টনজুড়ে সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গুলিস্তান ও নয়াপল্টনের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন নয়াপল্টন থেকে ফকিরাপুল রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য।
সরেজমিন নয়াপল্টন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নয়াপল্টন এলাকায় প্রবেশে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। চেক করছে মোবাইলফোনও।
অলিগলিতে বেরিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন পুরো এলাকার দোকান-পাট ও মার্কেট বন্ধ রয়েছে।
ডিএমপি হেডকোয়ার্টারের ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ আরমান হোসেন জাগো নিউজকে জানান, যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর। মানুষের জানমাল নিরাপত্তায় আমরা আছি। এছাড়া যানবাহন চলাচল সীমিত হলেও জরুরি প্রয়োজনে মানুষকে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, বাসায় যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। তারা যে অভিযোগ করেছে তার কোনো ভিত্তি নেই। যারা ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, জুমার নামাজ আদায় করেছেন তাদের পুলিশ কোনোভাবেই বাধা দেয়নি। জুমার নামাজ আদায় করে যে যার মতো চলে যাবে। তাদের প্রতি কোনো বাধা নেই। কিন্তু এখানে ৪০-৫০ জন ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহ আকবর’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এই স্লোগান বিএনপির নয়, এটা জামায়েতের স্লোগান। তাই আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি।
গতকাল পল্টনের রাস্তা খুলে দিলেও আজ আবার বন্ধ করার বিষয় বিপ্লব কুমার বলেন, সময়ের ওপর নির্ভর করে নিরাপত্তা বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই এলাকার বাসিন্দা ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত। যখন নিরাপদ মনে করা হয় তখন খুলে দেই। আবার কোনো ধরনের ঝুঁকি দেখলে বন্ধ করা হয়।
কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন মুসল্লি বেশে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তাদের প্রতিরোধে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি। কোনো দুষ্কৃতিকারী অথবা নাশকতাকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে গতকালের মতো আজও ঢাকার প্রবেশপথে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। দূরপাল্লার বাসগুলোকে চেক করে তবেই ঢাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে পথচারীসহ সাধারণ যাত্রীদের। তল্লাশির সময় কাউকে সন্দেহ হলে আটকও করা হচ্ছে।
এএএম/এমএইচআর/জেডএইচ/জিকেএস