সৌদিতে গ্রেফতার প্রবাসীদের মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ১০:৫২ এএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সৌদি আরবে গ্রেফতার আট প্রবাসীর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীদের স্বজনরা। গ্রেফতার আটজনকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান তারা।

শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে অংশ নেন গ্রেফতার ব্যক্তিদের স্ত্রী, মা, সন্তান, স্বজনসহ বেশ কিছু প্রবাসী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় গত ১৬ আগস্ট সৌদি আরবের আবহা ও মাহাইল এলাকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলেন। সেখানে সৌদি ‘আইন অমান্যের’ অভিযোগ এনে ৮ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে দেশটির পুলিশ। তারা সবাই চট্টগ্রামের।

গ্রেফতার আট প্রবাসী হলেন, বাঁশখালীর জয়নুল আবেদীন, রহমত উল্লাহ, খলিলুর রহমান ও ওমর ফারুক, সাতকানিয়ার সামিউল ইসলাম, মোহাম্মদ ইউসুফ, সেলিম উল ইসলাম ও বান্দরবানের মো. আশরাফুল ইসলাম। তাদের মধ্যে কয়েকজন পরিবারসহ সৌদি আরবে আছেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন গ্রেফতার প্রবাসী জয়নুল আবেদীনের মেয়ে মিফতাহুল জান্নাত জেসি। তিনি বলেন, আমার বাবা ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে আছেন। তিনিই আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এখন তিনি ছাত্র আন্দোলন নিহত ও আহতদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে সৌদি আরবে গ্রেফতার হয়েছেন। আজ অনেকদিন বাবার কোনো খবর পাচ্ছি না। আমাদের প্রতিটি মুহূর্তই যাচ্ছে যন্ত্রণায়।

মানববন্ধনে ছিলেন জয়নুল আবেদীনের স্ত্রী রুবি আক্তার ডেজিও। তিনি বলেন, ‘স্বামী সৌদি আরবের কারাগারে বন্দি আজ ২২দিন ধরে। তিন মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে আমার এক একটা দিন কাটছে এক একটা বছরের মতো। আমার স্বামীসহ গ্রেফতার ৮ প্রবাসীকে মুক্তির জন্য বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

বাবার মুক্তির দাবিতে পাঁচ বছরের রুকাইয়া তাসনিম জারিফাও দাঁড়িয়েছিল অন্যদের সঙ্গে। রুকাইয়ার একটাই কথা, ‘আমি বাবার মুক্তি চাই, বাবার সঙ্গে কথা বলতে চাই।’

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন গ্রেফতার প্রবাসী হাফেজ রহমত উল্লাহর ভাগনে এহসানুল হক, মেয়ে তাহমিনা আকতার আর বোন তাহেরা বেগম, সেলিম উল ইসলামের ছেলে মো, কাউসার, মেয়ে সামিরা সুলতানা সানজি, মো. ইউসুফ সিকদারের স্ত্রী উসরাতুল আকতার, ছেলে আবদুল্লাহ সাহাল ও মেয়ে সুমাইয়া সুলতানা।

মানববন্ধনে গ্রেফতার প্রবাসীদের স্বজনরা বলেন, ‘গ্রেফতার প্রবাসীরা আমাদের কারও ভাই, কারও স্বামী, কারও বাবা। প্রবাসে থেকে তারা সর্বাত্মকভাব ফ্যাসিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে সমর্থন দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার ডাকে সাড়া দিয়ে তারা সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ রেখেছিলেন। ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পর দেশ গঠনে তারা আবারও রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অবদান রাখতে শুরু করেন।’

ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের জন্য দোয়া মাহফিল ও স্মরণ সভা করতে গিয়েই এই প্রবাসীরা গ্রেফতার হয়েছেন জানিয়ে স্বজনরা আরও বলেন, ‘আমরা পরিবারের সদস্যরা ও আত্মীয়স্বজন আর্থিকভাবে প্রবাসী সদস্যদের ওপর নির্ভরশীল। পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যের গ্রেফতারের ফলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের আকুল আবেদন, আমাদের স্বজনদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন।’

এমডিআইএইচ/এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।