জাহিদ-পলক-আজমসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তার ছেলে, সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি পলক ও তার স্ত্রী এবং সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক ছয়টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মির্জা আজম জামালপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালনকালে নিজ ক্ষমতা অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে তার নিজ নামে-বেনামে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। বাবা মির্জা আজম তার মেয়ে অপির নামে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। অন্যদিকে মির্জা আজমের স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭১ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ধারা ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি মির্জা আজম ২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পত্তি পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্যদের নামে হেবা বা দান বা বিনিময়ের মাধ্যমে হস্তান্তর ও রূপান্তর করেছেন। তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির নামীয় মোট ৬০টি ব্যাংক হিসাবে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৭২৫ কোটি টাকা জমা ও ৭২৪ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন। অন্যদিকে দেওয়ান আলেয়া ২০২৪ সালে অক্টোবর পর্যন্ত ২০টি ব্যাংক হিসাবে ১৮১ কোটি টাকা জমা ও ১৭৯ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন বলে মামলার এজাহারে বলা হয়।
ছাত্রলীগের দুই নেতার কাছ থেকে ছাত্রদল নেতাদের চাঁদাবাজির অভিযোগ
গত অক্টোবরে মির্জা আজমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ২৩ অক্টোবর মির্জা আজমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ৩২ কোটি চার লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন। অন্যদিকে তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের নামে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯৩ হাজার ৪৩৩ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ পাওয়া যায়। তার নামে ৩১টি ব্যাংক হিসাবে ২২ কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৭৯ টাকা জমা এবং ১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৭ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ২২ আগস্ট পলকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি ও হত্যার অভিযোগে গত ১৪ আগষ্ট গ্রেপ্তার হন পলক।
এদিকে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং তার ছেলে রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ছেলে রাহাত মালেক ছাড়াও জাহেদ মালেকের স্ত্রী শাবানা মালেক, পুত্রবধূ সাকিবা মালেক, মেয়ে সাদিয়া মালেক ও সিনথিয়া আকমলের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়েছে। স্ত্রী শাবানা মালেকের নামে তিন কোটি ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৮২৭ টাকা, পুত্রবধূ সাকিবা মালেকের নামে ৯ কোটি ২৮ লাখ ৯৪ হাজার ৫৪৫ টাকা, মেয়ে সাদিয়া মালেকের নামে এক কোটি ৮৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, সিনথিয়া আকমলের নামে দুই কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার ২৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
এসএম/এমএইচআর/জেআইএম