রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে হেরে যাচ্ছে রাষ্ট্রচিন্তা : ববি হাজ্জাজ
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন- এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
বুধবার সংগঠনটির দফতর সম্পাদক লায়ন নুরুজ্জামান হীরার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ববি হাজ্জাজ বলেন, “দেশ যখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, অনিশ্চয়তা আর অজানা আশংকা যখন চারিদিকে, ক্ষুধা আর দারিদ্র্যতার স্পষ্ট ছাপ যখন খেঁটে খাওয়া মানুষের চোখেমুখে, তখন আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করলাম, সরকার বিভাজনের রাজনীতি আর ভিন্ন মত দমনের মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার পুরানো কৌশল অব্যাহত রেখেছে।
সহনশীলতা প্রদর্শনের পরিবর্তে গতকাল রাজধানীর কাকরাইল ও লালমাটিয়া অঞ্চল থেকে ফেসবুকে সরকারের সমালোচনা করার অভিযোগে ডিজিটাল সুরক্ষা আইনে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মোশতাক আহমদকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। অন্যদিকে একটি রাজনৈতিক মঞ্চের কর্মী দিদারুল ইসলামকে ইফতারের আগ মুহুর্তে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে৷ ত্রাণ নিয়ে সোচ্চার হওয়ায়ই এই প্রতিবাদী তরুণের কাল হয়েছে বলে আমরা মনে করি। প্রায় একই রকম ভাগ্যবরণ করতে হয়েছে ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে।”
ববি হাজ্জাজ বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তির রোষাণলে পড়ে নিখোঁজ থাকার প্রায় ৫২ দিন পর বেনাপোল সীমান্তে পাওয়া যায় কাজলকে। নিজ দেশে তাকে অনুপ্রবেশের মামলা দেয়া এবং পরবর্তীতে জামিন দিয়ে ভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো বিচারের নামে প্রহসন। এভাবে আমাদের চিন্তা করার স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের অধিকারকে রুদ্ধ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে হেরে যাচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রচিন্তা।’
তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য অধিদফতর দেশের সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিং করলেও সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। কোন বিশেষ মহলের ইন্ধনে এ কাজ করা হয়েছে আমরা জানি না। তবে দেশে এখনও করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা পর্যাপ্ত নয়। যত পরীক্ষা হয়েছে তার প্রায় ৬০ ভাগ হয়েছে গত ১০ দিনে। করোনা উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করাতে এসে মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট করছে। বারবার চেষ্টা করেও পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে না পারা, ফলাফল প্রকাশে বিড়ম্বনা, ফলাফল নিয়ে বিভ্রান্তি এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান নিয়ে জনমনে সন্দেহ রয়েছে।
এত বড় একটা বৈশ্বিক মহামারির এত দিন পরেও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কোনো গণসচেতনতামূলক প্রচারণা আমরা শুরু করতে পারিনি। স্বাস্থ্য অধিদফতর নকল মাস্ক সরবরাহ করে ইতোমধ্যে সমালোচিত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতা দিবালোকের মত পরিষ্কার। জনস্বার্থে আমরা সরকারকে গণতান্ত্রিক ও সহিষ্ণু রাজনৈতিক আচরণ করতে এবং স্বাস্থ্যবিধির ওপর ব্যাপকভিত্তিক প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানাচ্ছি।”
কেএইচ/এমএআর/এমএস