সরকারের দায়িত্বহীনতায় জনগণ চরম হুমকিতে
সরকারের দায়িত্বহীনতায় জনগণ চরম হুমকিতে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, বাগাড়ম্বর করে সংকটকে আড়াল করতে চাইছে সরকার। বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকদের মতামত এখন সরকারের কাছে গুরুত্বহীন। দানবীয় শক্তি সক্রিয়ভাবে লুটপাটে নেমে পড়ছে। করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতার পাশাপাশি চলছে লুটপাট। সরকারের দায়িত্বহীনতা, অদক্ষতা, সমন্বয়হীনতা, অমনোযোগিতা, অদূরদর্শীতার কারণে জনগণ এখন চরম হুমকিতে রয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ মে) সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির অনলাইন সভায় তারা এ কথা বলেন। সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করেন মো. কিবরিয়া এবং রিপোর্ট পেশ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম।
করোনা মোকাবিলায় সিপিবি ও গণসংগঠনসমূহের উদ্যোগ ও কার্যক্রম সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ও ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স টিমে’র সমন্বয়ক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, কমিউনিস্ট পার্টি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে চলমান করোনা-মহাসংকটে জাতির সমস্ত শক্তি-সামর্থ্যের সহযোগিতামূলক সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হলেও, সরকার কোনো সাড়া দেয়নি। কার্যকর লকডাউন নিশ্চিতে নিরন্ন মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু সরকার সে পথে হাঁটেনি। একেবারেই অপ্রস্তুত অবস্থায় গার্মেন্ট খুলে দিয়ে শ্রমিকদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। করোনার সংক্রমণ যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ ছাড়াই মার্কেট, ব্যবসাকেন্দ্র, দোকানপাট, শপিংমল খুলে দেয়া হয়েছে। দুই কোটি পরিবারের ত্রাণ সাহায্যের প্রয়োজন হলেও মাত্র ৫০ লাখ পরিবারকে ত্রাণসাহায্য দেয়া হবে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, বর্তমানে দেশের চিকিৎসা-ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। করোনা-চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার মারাত্মক অপ্রতুলতা রয়েছে। সমন্বয়হীনতা, চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা-ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা রয়েছে। প্রয়োজন মতো করোনা-পরীক্ষার ব্যবস্থা এখনও গড়ে তোলা হয়নি। করোনা-চিকিৎসা ছাড়া অন্যান্য সাধারণ চিকিৎসা দিতেও চিকিৎসা-ব্যবস্থা চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। এ সংকট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার উদাসীন।
সভায় অবিলম্বে নিবর্তনমূলক ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বাতিল এবং এই আইনে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করা হয়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন লীনা চক্রবর্তী, অধ্যাপক ডা. এম এ সাঈদ, রুহিন হোসেন প্রিন্স, জলি তালুকদার, মাহবুবুল আলম, মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন, অধ্যাপক এম এম আকাশ, মৃণাল চৌধুরী, আজহারুল ইসলাম আরজু, অ্যাড. মণ্টু ঘোষ, এনামুল হক, ডা. দিবালোক সিংহ, অধ্যাপিকা এ এন রাশেদা, এমদাদুল হক মিল্লাত, মনিরা বেগম অনু, ডা. ফজলুর রহমান, শাহরিয়ার মো. ফিরোজ, ইসমাইল হোসেন, মাকসুদা আক্তার লাইলি, কাজী রুহুল আমিন প্রমুখ।
এফএইচএস/এএইচ/এমএস