অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের দাবি ছাত্রদলের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫১ পিএম, ১৭ মে ২০২০

করোনাভাইরাস সংক্রমণে ‘লকডাউনে’ সারাদেশে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ এবং অনলাইনভিত্তিক ক্লাস-ভর্তি-পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের সংগঠনের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘‘প্রায় ‍দুই মাসের অধিক সময় ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এই সময়ে শিক্ষর্থীদের বেতন দেয়া তাদের অভিভাককদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি সদয় হয়ে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ করে দিলে তা হবে মানবতার জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের দাবি এই মুহূর্তে অনলাইনভিত্তিক ক্লাস, ভর্তি পরীক্ষা ও ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত করতে হবে।”

খোকন বলেন, ‘‘একই সাথে আমরা করোনা মহামারির পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে নিজ নিজ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।”

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রদল সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে সংগ্রাম করে আসছে। লকডাউনের কারণে স্থবির হয়ে আছে অর্থনীতি। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের বেতন দেয়া তাদের অভিভাবকদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে ভর্তি, ক্লাস, পরীক্ষা অব্যাহত আছে। আপনারা জানেন অনেক জায়গায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিক মতো থাকে না। অনেকে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। এই অবস্থায় তাদের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা চালানো অসম্ভব। আমরা মনে করি, এমতাবস্থায় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ব্যবসায়িক মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ।”

তিনি বলেন, ‘‘তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি করে শিক্ষা ব্যয় নির্বাহ করে, সেটাও করোনা মহামারির কারণে সম্ভব হচ্ছে না। ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য, মূল্যবান ডিভাইস কেনাও অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে অসম্ভব। এর ওপর অনেক স্থানে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকার কারণে অনলাইনভিত্তিক পড়াশোনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।”

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সময়ে রাজশাহীর তানোরের আবদুল মালেক, মৌলভীবাজারের ফতেহপুরের শাহ আলম, গাইবান্ধার ইমতিয়াজ আহমেদ রনি, লারমনিরহাটের আদিতমারীর আমিনুল ইসলাম রিপনকে গ্রেফতারর এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমর ফারুক, পিরোজপুর সালাউদ্দিন কুমার, আলী আহমেদ তুষার, সিলেটের জহিরুল ইসলাম আলাল, ফেনীর নিলয় হাসান রবিনের ওপরের ক্ষমতাসীন দলের হামলার কথা উল্লেখ করে এর নিন্দা জানান ইকবাল হোসেন শ্যামল।

তিনি বলেন, ‘‘ ছাত্রদল মানবতার সেবায় যেসব কাজকর্ম করছে, তাতে বাধা দেয়া হচ্ছে। যেমন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন বসাতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি আমরা যখন জনগণের জন্য এই মানবিক কাজগুলো করছি তখন আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার এবং হামলা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে মাস্ক, স্যানিটাইজার, সুবিধবঞ্চিত মানুষের বাড়ি বাড়ি ত্রাণসামাগ্রি পৌঁছে দেয়া, নগদ সহায়তা প্রদান, রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, জীবানুনাশক স্প্রে ছিটানো, কর্মহীন ক্ষুদ্র চাষি ও দিন আনে দিন খায় মানুজনদের সহায়তা প্রদান, ইফতার-সেহেরি বিতরণের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘ ছাত্রদল সারাদেশে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেগুলোর আপডেট নিয়মিত ফেসবুক পেজ ‘মানবাতার সেবায় ছাত্রদলে (url-www.facebook.com/socialjcd/)’ দেয়া হচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফ, সাংগঠনিক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/জেডএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।