দুর্নীতির ঘাটতি মেটাতেই বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল : ন্যাপ
বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর দুর্নীতি আর লুটপাটের ঘাটতি মেটাতেই গ্রাহকদের ভুতুড়ে বিল প্রদানের মাধ্যমে হয়রানি ও জনগণের পকেট কাটার ব্যবস্থা করছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)।
শুক্রবার (২২ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ মন্তব্য করেন।
তারা বলেন, করোনা তাণ্ডবের মাঝে বিদ্যুৎ বিভাগের ভুতুড়ে বিলের তাণ্ডব জনমনে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এমনিতেই বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতির কোন ইয়ত্তা নেই। তাদের দুর্নীতির ফলে সারা বছরই কোনো না কোনো গ্রাহককে গুনতে হয় এই ধরনের ভুতুড়ে বিলের হিসাব। দুর্নীতির মাধ্যমে তারা যে অবৈধ আয় করেন তাকে বৈধ করতেই সাধারণ গ্রাহককে ভুতুড়ে বিল ধরিয়ে দিয়ে প্রতিনিয়ত মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছে; এমনটাই অভিযোগ আজ ভুক্তভোগী গ্রাহকদের মুখে মুখে।
নেতৃদ্বয় বলেন, যেখানে একজন গ্রাহকের বিদ্যুতের বিল মাসে ৩-৪ হাজার টাকা হয়, হঠাৎ করে তার বিল ভৌতিকভাবে মার্চে এসে ৫২ হাজার টাকা হয়ে যাওয়াটা কতবড় লুট তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। বিদ্যুৎ খাতের অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মিলিতভাবে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং কাল্পনিকভাবে এ সকল বিল তৈরি করেছে। সমগ্র দেশের বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যালয়গুলো দুর্নীতিবাজদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ কিংবা অন্য যেকোনো সেবার জন্য অবৈধ লেনদেন এখানে অপরিহার্য, যেন এটাই রীতি।
ন্যাপ নেতৃদ্বয় আরও বলেন, প্রথম ধাপ অপেক্ষা দ্বিতীয় ধাপের ট্যারিফ মূল্য প্রতি ইউনিটে ১ টাকা ৪৫ পয়সা বেশি আর সর্বশেষ ধাপ অর্থাৎ ষষ্ঠ ধাপের ট্যারিফ মূল্য প্রথম ধাপের ট্যারিফ মূল্যের প্রায় তিনগুণ বেশি এবং একজন গ্রাহককে এই হিসাবেই মোট ব্যবহৃত ইউনিটের জন্য অতিরিক্ত মূল্য গুনতে হয়। বর্তমানের ভুতুড়ে বিলে তারা যে অতিরিক্ত ইউনিট যুক্ত করেছেন তার ফলে প্রত্যেক গ্রাহককে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় ধাপের সমপরিমাণ ইউনিট ব্যবহার করেও তৃতীয় চতুর্থ কিংবা ষষ্ঠ ধাপের ইউনিট মূল্য প্রদান করতে হবে। অন্যদিকে ডিপিডিসির কর্মকর্তাদের বর্ধিত বিল সমন্বয়ের আশ্বাসও এক ধরনের প্রতারণার কৌশল মাত্র।
তারা বলেন, ভয়াবহ মরণঘাতী করোনা পরিস্থিতি ও ঈদকে সামনে রেখে সর্বস্তরের পেশাজীবী মানুষই আজ দিশেহারা। এমনই এক দুর্যোগ মুহূর্তে কাল্পনিক রিডিং দেখিয়ে ভুতুড়ে বিলের খড়গ সাধারণ মানুষের ওপর যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় অবিলম্বে সকল ভুতুড়ে বিলকে সমন্বয় নয় সংশোধন করতে হবে। যে গ্রাহক যেই ধাপের পরিমাণ ইউনিট ব্যবহার করেছেন সেই ধাপের ট্যারিফ মূল্য অনুযায়ী বিল প্রস্তুত করতে হবে।
তারা বলেন, করোনার এই মহামারিতে বাংলাদেশ সরকারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার যখন তার জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রণোদনা দিচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে দেশের সেবাদানকারী সরকারি সংস্থার এমন দৃষ্টান্ত সাধারণ মানুষকে আরও বিক্ষুব্ধ করে তুলবে। অনতিবিলম্বে বর্ধিত মূল্য হ্রাস করে ডিপিডিসিসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা দায়িত্বশীল হবে, জনগণ সেটাই প্রত্যাশা করে।
কেএইচ/এফআর/জেআইএম