কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার দায় সরকারকেই বহন করতে হবে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১১:৪৬ এএম, ০৪ জুন ২০২০

উৎপাদন খরচ কমানো, ভূমির সুষ্ঠু বণ্টন, চাষে কৃষককে সরাসরি ভর্তুকি প্রদান করে কৃষি ও কৃষককে রক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার সে পথে না হেঁটে সস্তায় বাজিমাত করার জন্য ‘চাষের জমি ফেলে রাখলে অধিগ্রহণ করা হবে’ এ বক্তব্য ছুড়ে দিয়েছে।

চাষ না করার জন্য জমি ফেলে রাখার দায়ে যদি কৃষকের জমি অধিগ্রহণ করতে হয় তাহলে রাষ্ট্র ও সরকারের গণবিরোধী ভূমিকার কারণে যে কৃষক সবজি, ফুলসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পায়নি তার দায়ও সরকারকেই বহন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুন) বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির এক যুক্ত বিবৃতিতে একথা বলেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ধান মেরে চিংড়ি ও অন্যান্য মৎস্য চাষ হয়েছে রাষ্ট্রীয় মদদে। তারাই অপরিকল্পিতভাবে ফসলি জমি ধ্বংস করে অবকাঠামো ও স্থাপনা নির্মাণ করে চলেছে। কৃষি উৎপাদনের উপকরণকে বাণিজ্যিক পণ্যে রূপান্তরিত করেছে এবং কৃষিক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত নয়া উপনিবেশিক ও আধা সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর রেখেছে।

বার বার আবেদন নিবেদন করার পরও খাসজমি ভূমিহীন গরিব কৃষকদের মাঝে বণ্টন করা হয়নি। তারা সুন্দরবন ও জলবায়ু ধ্বংস করায় দেশে বন্যা, জলাবদ্ধতা তথা প্রাকৃতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা, পানির স্তর নেমে যাওয়ার সংকটসহ সামগ্রিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে কৃষকের কষ্টের ফসল বার বার ধ্বংস করেছে। নদ-নদী ভরাট হয়ে অকাল বন্যায় ফসলহানিও ঘটে চলেছে।

তারা বলেন, কৃষি উৎপাদনে সার-বীজ-কীটনাশকসহ সেচে ব্যবহৃত তেল-ডিজেল বিনামূল্যে ও অন্যান্য উপকরণ ভর্তুকিমূল্যে প্রদান এবং উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মূল্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান না করে মধ্যসত্ত্বভোগীদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে সরকার। ফলশ্রুতিতে আজ ধনী কৃষক মধ্যকৃষকে, মধ্যকৃষক গরিব কৃষকে আর গরিব কৃষক ভূমিহীন কৃষকে পরিণত হয়ে চলেছে।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, কৃষি উৎপাদন বিমুখ হয়ে কৃষিতে জীবিকা নির্বাহ করতে না পেরে দেশের শহর বন্দরসহ বিদেশে শ্রম দাসত্ব করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকরা। নতুন কর্মক্ষেত্রে চরম নির্যাতন-নিপীড়িত ভোগ করছে, অঘোরে জীবন দিচ্ছে।

অথচ রাষ্ট্র ও সরকার তার দায়-দায়িত্ব পালন না করে উল্টো জমি অধিগ্রহণের নির্দেশ প্রদান করাটা সম্পূর্ণ গণবিরোধী। আমরা এ নির্দেশনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্থাপিত দাবিসমূহসহ কৃষকের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে কৃষককে সহায়তা ও উদ্বুদ্ধ করার বদলে হুমকি প্রদানমূলক নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকসহ সমগ্র জনগোষ্ঠিকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তারা।

এফএইচএস/এমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।