এত মৃত্যু, এত সংক্রমণ তারপরও কি আমাদের বোধোদয় হবে না?
‘কিছু মানুষ আছেন যাদের করোনার লক্ষণ স্পষ্ট কিন্তু দিব্যি ঘুরে বেড়ান, পরীক্ষা করান না’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে দেয়া এক ভিডিওবার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মহামারি কেড়ে নিচ্ছে এই সবুজ বাংলার আনন্দ কোলাহল। মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ঘটেছে ছন্দপতন। আমরা আর কত মৃত্যু ধারণ করব? নিত্যদিনের শোকবার্তায় জাতি উদ্বেগাকুল। এরই মাঝে আমাদের কিছু মানুষ সংক্রমণ লুকিয়ে চলাফেরা করছেন। করোনা লক্ষণ স্পষ্ট হলেও তারা দিব্যি ঘুরে বেড়ান, পরীক্ষা করেন না। বরং লুকিয়ে রাখেন। এতে যা ক্ষতি করার তা করে ফেলছেন। ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। একজন থেকে শতজন হচ্ছেন আক্রান্ত। এত মৃত্যু, এত সংক্রমণ তারপরও কি আমাদের বোধোদয় হবে না? উচ্চ আদালতকেও ভিড় এড়াতে নির্দেশনা দিতে হচ্ছে। তবুও আমাদের বোধ কাজ করছে না।
তিনি বলেন, সরকার নানা সীমাবদ্ধতা নিয়েও দিন-রাত কাজ করছে। এটা একটা মহামারি। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশই বিদ্যমান সুবিধা দিয়ে এ মহামারি ফেস করতে হিমশিম খাচ্ছে। আমেরিকার মতো দেশে নৌবাহিনীর জাহাজকে হাসপাতাল বানাতে হয়েছে। ভারতে ট্রেনের বগি করা হয়েছে হাসপাতাল। আমি বলতে চাই, প্রতিকারের চেয়ে জোরাল প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়া আমাদের বিকল্প উপায় নেই। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যার সীমাবদ্ধতা আছে। তবু সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা যদি বিপদের গভীরতা ও মাত্রা বুঝে সচেতন না হই তাহলে তা হবে জেনেশুনে আগুনে ঝাঁপ দেয়া। আমরা আর কোনো সন্তানকে হারাতে চাই না। ক্ষণিকের উদাসীনতা, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অবহেলা জীবনের চির চেনা পথ থেকে আমাদের বিচ্যুত করে দিতে পারে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের ভালো থাকার মূলে সচেতনতা। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারের সার্বজনীন ঐক্য, আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্মিলিত, সমন্বিত প্রয়াস। আমাদের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবনে যেমন সীমাবদ্ধতা থাকে, তেমনি রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে থাকে নানা সীমাবদ্ধতা। সরকারের নিরলস প্রয়াসে আমরা সহযোগিতা করি, যা নিজেকে নিজে সহযোগিতা করা। এ মহামারিতে নিজের জন্য নিজে সচেতন না হলে কেউ পথ দেখাতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা সাহসী বীরের জাতি। নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে মরুভূমিতে আশার শতফুল ফোটাই। অনাবাদি জমিকে করি সবুজ, প্রবল মনের শক্তি, দায়িত্ববোধ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে নিজ নিজ ঘরকে সচেতনতার দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলি। আস্থা রাখি আমাদের আশার বাতিঘর সংকটের সাহসী নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ওপর। সকলের ইস্পাত কঠিন ঐক্য ও সচেতনতার প্রাচীর গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে ইনশাল্লাহ আমরা আবার ফিরে পাব আমাদের চিরচেনা জগত, ফুল-ফসল-হাসি-আনন্দের বাংলাদেশ, উদ্বেগহীন গোধূলি আর আশা জাগানিয়া সুবর্ণ প্রভাত।
এইউএ/এমএআর/এমএস