উৎকণ্ঠায় গোলাপবাগ-মানিকনগর-সায়েদাবাদের বাসিন্দারা

নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিএনপির গণসমাবেশ। যে মাঠে এই সমাবেশ হচ্ছে তার একপাশে সায়েদাবাদ অন্যপাশে মানিকনগর। এই অঞ্চলের বাসিন্দারা চাচ্ছেন সমাবেশটি যেন শান্তিপূর্ণভাবে হয়।
তবে সমাবেশ ঘিরে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের ঘটনার নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারা। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
তারা বলছেন, আমরা শান্তি চাই। কারো কোনো ক্ষতি হোক সেটা আমরা চাই না। কিন্তু সম্প্রতি রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তাই সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুটা উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার পর থেকে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ শুরু হয়। এরইমধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে পুরো মাঠ। আশপাশের সড়কেও নেমে এসেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে রেখেছেন তারা।
মানিকনগরের বাসিন্দা জামিরুল রেজা বলেন, স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়ে নিয়ে মানিকনগরের বসবাস করছি প্রায় ১০ বছর। এ অঞ্চলে নিরাপত্তা নিয়ে কখনো সমস্যায় ভুগিনি। আমাদের বাসা থেকে বিএনপির সমাবেশস্থল খুব দুরে নয়। তাই এই সমাবেশ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্নে আছি।
তিনি বলেন, আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ হয়ে যাক। এখানে যেন কোনো অপ্রতিকার ঘটনা না ঘটে। আমরা পরিবার নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।
এ এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. ফয়েজ বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য ঘিরে সম্প্রতি পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এরইমধ্যে নয়াপল্টনে ঘটে গেছে অপ্রীতিকর ঘটনা। এ পরিস্থিতিতে গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির সমাবেশ হচ্ছে। বিএনপির সমাবেশ যে মাঠে হচ্ছে তার চারদিকেই আবাসিক এলাকা। স্বাভাবিকভাবেই এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ কাজ করছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ শান্তি চায়। কিন্তু রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার খেসারত সাধারণ মানুষকেই বেশি দিতে হয়। আমরা চাই বিএনপি যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করে।
গোলাপবাগ মাঠের পাশেই অবস্থিত যাত্রাবাড়ী ধলপুর এলাকা। এ এলাকার বাসিন্দা ফরিদ হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা চাই রাজনীতি নিয়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। পরিবার নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই। বিএনপির সমাবেশ যেখানে হচ্ছে এটা মূলত আবাসিক এলাকা। এই সমাবেশ ঘিরে কিছু হলে স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব এলাকার বাসিন্দাদের ওপরও পড়বে।
গোলাপবাগের বাসিন্দা খায়রুল হোসেন বাবু বলেন, আমরা আশা করি সমাবেশ নিয়ে বিএনপি কোনো ধরনের অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে না। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করে এই এলাকা ছেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, গতকাল রাত থেকেই গোলাপবাগ মাঠে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এখনো পর্যন্ত তারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থা নিয়ে আছেন। আমরা চাই সমাবেশের শেষেও যেন এ অবস্থা অব্যাহত থাকে।
এর আগে বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে মকবুল হোসেন নামে একজন মারা যান। আহত হন অনেকে। এরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।
নয়াপল্টন থেকে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীসহ গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৪০০ নেতাকর্মীকে।
এমএএস/জেডএইচ/জেআইএম