স্বদেশে এক অন্যরকম শান্তি

জাদীদ রওশন, টরন্টো কানাডা
আমরা যেখানে বসবাস করি তার চারপাশে কিংবা স্বস্তির জন্য একটু বাইরে বেরোতে গেলে আশপাশে যা দেখি যেমন গাছপালা, নদী, খাল- বিল ফুল, ফল এগুলো আমাদের এখানে এবং বাইরের দেখা কিছু বিষয়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঋতুচক্রের হিসেব অনুযায়ী গ্রীষ্ম বর্ষা থেকে শুরু করে শীত বসন্ত এগুলো আমাদের চোখের সবসময়ই পড়তো কিন্তু এখন আর সে রকম কিছু দেখি না।
‘চৈত্র মাসে দুপুর বেলা আগুন হাওয়া বয় দস্যি ছেলে ঘুরে বেড়ায় সকল পাড়াময়’। কিন্তু সেই চৈত্র যে তার সীমানা ছাড়িয়ে কত দূর চলে গেছে তা বলাই বাহুল্য। আষাঢ় মাসে বর্ষা নেই, শ্রাবণের বারিধারা নেই, শরৎ কখনো উঁকি দিয়ে চলে যায় বোঝাই যায় না। শীত সে তো দেড় থেকে দুই মাস আবার সেই গ্রীষ্মের খরতাপ। দাবদাহ।
শহরে সেই গুটি কয়েক জায়গা রমনা পার্ক, ধানমন্ডি লেক, গুলশান পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান এইতো হাতেগোনা কিছু গাছপালা আর পানির আধার। লোভী দাম্ভিক গোষ্ঠী, ভূমিদস্যু জলদস্যু, সবকিছু উজার করছে। চুষে চুষে খাচ্ছে মাতৃভূমির তাজা রক্ত। গ্লোবাল ওয়ার্মিং ক্লাইমেট চেঞ্জ ইত্যাদি বলে আমরা কিছুটা তৃপ্ত হচ্ছি।
হ্যাঁ উন্নত দেশগুলো এগুলো নিয়ে ভাবছে, কাজও করছে তাই বলে গাছপালা উজাড় হয়ে যায়নি প্রবহমান নদী হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়নি। সে কারণে এই ছবি আর ভিডিও দেওয়া। আমি ফলস এবং স্প্রিং (বসন্ত) দুটোই পেয়েছি।
গাছের পাতা নাড়ানো দেখে ঝড় মনে হতে পারে। কিন্তু একটি সুন্দর বিকেল। বাতাসের মাতামাতি। প্রাণ ভরে নিঃশাস নেওয়া। এত গাছ তবু গাছ লাগানোর কমতি নেই। পার্কের গা ঘেঁষে চলে গেছে ছোট নদী শহরের ভেতর দিয়ে।
এবার ঋতু বৈচিত্রের আরেকটি মূল বিষয় ভৌগোলিক অবস্থান। আমাদের এখানে যখন শীতকাল আসে বিশেষ করে শীত অনুভব করা যায় পঞ্চগড়, তেতুলিয়া কিংবা শ্রীমঙ্গলে। তাপমাত্রা ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু শীত প্রধান দেশ হিসেবে কানাডায় এটাকে শীতের আগমনী বার্তা বললে ভুল হবে না। গেলো বছর এক দিনে বরফ পড়েছিল ত্রিশ সেন্টিমিটার যা ছিল ত্রিশ বছরের রেকর্ড।
যাই হোক, নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি শীত বিশ পঁচিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর একটি ছবিও দিয়েছি। বিধাতার রহস্য- সারা পৃথিবীজুড়ে আকাশ নীল, মেঘ তুলোর মতো শাদা। আকাশ ছুয়ে যাওয়া সবুজ গাছ। এত কিছুর পরেও কেন জানি দেশে ফিরে শান্তি পাই, আমি জানি না।
এমআরএম/এমএস