নিউইয়র্কে একদিনে করোনায় প্রাণ গেল তিন বাংলাদেশির
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। ক্ষমতাধর এই রাষ্ট্রটি করোনার কাছে এখন নাজেহালের শিকার। দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। মারা গেছে ৩৭ হাজারের বেশি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি মারা গেছে ১৫৭ জন।
নিউইয়র্কে ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন। তারা হলেন- নাহিদ সুলতানা, শাহ আলম তালুকদার ও আবিদুল হক মুন্সী।
নিউইয়র্কের নেত্রকোনা সমিতির উপদেষ্টা বদর উদ্দিন আহমদের স্ত্রী নাহিদ সুলতানা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭ এপ্রিল বিকেলে মারা যান। ইন্না লিল্লাহে রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তিনি স্বামী সন্তানসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে তিনি অসুস্থ হয়ে লংআইল্যান্ড জুইস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গত ১৭ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
কুইন্সের জ্যামাইকায় বসবাসকারী শাহ আলম তালুকদার করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৭ এপ্রিল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় লংআইল্যান্ড জুইস হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪২ বছর। মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ১ মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
শাহ আলমের বন্ধু বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সদস্য সাদী মিন্টু জানান, শাহ আলম সপ্তাহখানে আগে করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে লংআইল্যান্ড জুইস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি জানান, কিছুদিন আগে শাহ আলমের মারা মারা যান। তার মাকে নিউজার্সিতে বাংলাদেশ সোসাইটির গোরস্তানে দাফন করা হয়। মায়ের কবরের পাশেই শাহ আলম তালুকদারকে কবর দেয়া হবে। তার দেশের বাড়ি বিক্রমপুরের সিরাজদিখান উপজেলায়।
এদিকে আরেক বাংলাদেশি আবদুল হক মুন্সী করোনায় আক্রান্ত হয়ে এলেমহার্স্ট হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো (৫৫)।
করোনায় আক্রান্তের প্রকোপ কিছুটা কমে যাওয়ার সাথে সাথে স্বস্তি ফিরে আসছে নিউইয়র্ক সিটিতে। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোর গ্লোসারি, রেস্টুরেন্ট এবং অন্যান্য স্টোরগুলো খোলা হচ্ছে। তবে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত নিউইয়র্কে লকডাউন বাড়ানো হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডওমিটার ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২২ লাখ ৫০ হাজার ৪০৫ জন। মারা গেছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৫ জন। অবস্থা আশঙ্কাজনক ৫৬ হাজার ৯৬৩ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৮৬ হাজার ৪৯৭ জন। মারা গেছে ৮ হাজার ৬৭২ জন।
তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে-৭ লাখ ১০ হাজার ২১ জন। মারা গেছে ৩৭ হাজারের বেশি-৩৭ হাজার ১৫৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩২ হাজারের বেশি। আর মারা গেছে আড়াই হাজার। দেশটিতে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৬০ হাজার ৫১০ জন।
এমআরএম/পিআর