করোনাভাইরাস: আইইএলটিএস বাদে বিদেশে উচ্চশিক্ষা
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে গেছে গোটা বিশ্ব। ফলে মানুষ তার নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছুই করতে পারছে না। সারাবিশ্বে লকডাউন চলায় বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এহেন পরিস্থিতিতে তাদের দুশ্চিন্তা কমাতে ভাবছে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ইতোমধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের তারিখ শেষ হয়ে গেছে।
বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, ডেনমার্ক, জাপান ইত্যাদি দেশে বছরে তিন সেশনে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে। তবে কিছু দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে সারা বছরে আবেদন করা যায়। যেমন, ইংল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বড় সুযোগ জার্মানির সেশন সবে শুরু হয়েছে। এপ্রিলের ১৫ থেকে চলবে জুন-জুলাই পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসের কারণে যাদের আইইএলটিএস (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম) দেয়া সম্ভব হয়নি তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শর্তসাপেক্ষে ভর্তি নিতে বিকল্প পদ্ধতিতে ইংরেজি দক্ষতার পরীক্ষা নিতে শুরু করেছে।
১) ডুয়োলিংগো (Duolingo) ইংরেজি পরীক্ষা ঘরে বসে অনলাইনে দেয়া যাবে, যেটার ফলাফল দুই দিনে পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইংল্যান্ডসহ পৃথিবীর প্রায় ৯৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় এই টেস্টি ইংরেজি দক্ষতার বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করে। যেটা এই লিংকে দেখতে পারেন https://englishtest.duolingo.com/institutions
২) শর্ত হচ্ছে আপনাকে এখন অ্যাডমিশন দেবে কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে IELTS বা অন্য ইংরেজি দক্ষতার পরীক্ষা দিতে হবে এবং অ্যাডমিশন রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী পর্যাপ্ত স্কোর পেতে হবে।
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ইংরেজি দক্ষতার পরীক্ষা। (IELTS or TOEFL থেকে একটু সহজ)।
৪) মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন MOI থাকলে IELTS শিথিল যোগ্য। (আগেও ছিল কিন্তু অ্যাডমিশন পেতে বেগ পেতে হতো, যা এখন সহজে পাওয়া যেতে পারে। শুধু মাস্টার্সের জন্য)
৫) স্পেশাল অ্যাডমিশন: কিছু সময়ে এই অ্যাডমিশন দিয়ে থাকে কোনো শিক্ষার্থীর বিশেষ অবস্থা দেখে।
আইইএলটিএস পরীক্ষার তথ্য ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। নেদারল্যান্ডসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট লিংক দেওয়া হলো- https://www.wittenborg.eu/ielts-launches-online-test-prospective-international-students.htm
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট, বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ডেস্কে ই-মেইল করেও সরাসরি জানতে পারবেন। ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও জানতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মে যেমন, লিংকড-ইন, ফেসবুক ইত্যাদি প্লাটফর্মে তথ্য পেতে পারেন।
কোথায় কখন কত টাকা লাগবে?
এ বিষয়টির ভিন্নতা আছে। Duolingo Test এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব টেস্টের ফিস নেয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে কোনো ফিস নেয় না। বিস্তারিত তাদের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে।
ভর্তি হলে স্কলারশিপ পাওয়া যাবে?
প্রথমত, স্কলারশিপ পাওয়া নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের উপরে। যেমন- একাডেমিক রেজাল্ট, মোটিভেশান লেটার, রেফারেন্স লেটার, এক্সটা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস, রিসার্চ পেপার ইত্যাদির উপর। ইংরেজি দক্ষতার পরীক্ষা শুধু অ্যাডমিশনের জন্য নিয়ে থাকে। তবে স্কলারশিপ পেতে হলে আনকন্ডিশনাল অফার লেটার প্রয়োজন হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
আগের থেকে এখন ভিসা হওয়ার সম্ভাবনা একটু বেশি। ১) এপ্লিকেশনের সংখ্যা অনেক কমেছে করোনার কারণে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেহেতু অ্যাডমিশন দিচ্ছে তাই ভিসা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফুল ফ্রি শিক্ষার্থীদের ভিসা খুব কমই রিফিউজ হয়। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে স্কলারশিপ পাওয়া অনেকটা প্রতিযোগিতার বিষয় হবে।
কিন্তু শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে যেন VO এর সাথে ভিসা ইন্টারভিউর সময় প্রত্যয় ঠিক থাকে এবং শুধু পড়াশোনা করার জন্য যাচ্ছেন ও সেই যোগ্যতা আছে তার প্রমাণ দিতে হবে।
আবু মুসা/শিক্ষার্থী, দি হ্যাগ ইউনিভার্সিটি অব এপ্লাইড সাইন্স, নেদারল্যান্ডস
এমআরএম/এমকেএইচ