ভেন্টিলেটরেই সন্তান প্রসব বাংলাদেশির
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে তাসনিম শাহীন নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি একমাস আগে হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় তাকে দেশটির জ্যামাইকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার চরম অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেটরে দেয়া হয়।
সেই সময় চিকিৎসকরা তাসনিম শাহীন এবং তার সন্তানের জীবন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে ছিলেন। মা-সন্তানের বাঁচার সম্ভাবনা ছিল একেবারেই কম। বলতে গেলে কোমায় চলে গিয়েছিলেন তাসনিম। কিন্তু চিকিৎসক এবং তাসনিমের পরিবার কখনও আশা ছাড়েননি। তারা শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তাসনিমের স্বামী শাহনেওয়াজ বলেন, ‘সম্প্রতি চিকিৎসক আমাকে কল করে জানান আমার স্ত্রীর পেটের সন্তান ডেলিভারি করতে হবে। এই কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। স্ত্রীকে নিয়েই দু:চিন্তায় আছি, তার উপরে অজ্ঞান স্ত্রীর ডেলিভারি। আমি ডাক্তারকে বললাম আমার আরও দুটো ছোট ছোট সন্তান রয়েছে’।
তিনি বলেন, ‘আপনি যা ভালো মনে করেন তাই করেন। ডাক্তার রাম আমাকে বললো, বাচ্চা ডেলিভারি করতেই হবে। ঝুঁকি হলেও আমি মনে করি এটা আপনার স্ত্রীর জন্য ভালো হতে পারে, আবার অনাগত সন্তানের জন্যও। তা না হলে দুই জনের জীবনই বিপণ্ন হতে পারে। আমি চিকিৎসককে সম্মতি দিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার সন্তান ‘রিধা’ পৃথিবীর মুখ দেখলো’।
চিকিৎসক রাম জানান, ‘রিধা সুস্থ ছিল। কিছুদিন পর দেখা গেল তার মা নিজে থেকে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার ডাক্তারি জীবনে এটা প্রথম দেখলাম। আমার কাছে এটা ঘটনা মিরাক্যাল মনে হয়েছে’।
অন্যদিকে তাসনিম জানান, তিনি বলতে পারবেন না, তার কী হয়েছে। আমার যখন জ্ঞান ফিরতো আমি মনে করতাম আমি ঘুমিয়ে আছি, আমি দুর্বল। কিন্তু আমার জীবনে এতকিছু ঘটে গেল আমি কিছুই বলতে পারলাম না।
চিকিৎসক আরও জানান, ৩২ দিন ভেন্টিলেটরে থাকার পর তাসনিমের জ্ঞান ফিরেছে। জ্যামাইকা হাসপাতালে মা ও মেয়ে সুস্থ রয়েছে। আগামী ১২ মে তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হবে। অনেকেই বলেছেন, আল্লাহ চাইলে সবই সম্ভব। ঠিকানা
এমআরএম/এমকেএইচ