অস্ট্রিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে অস্ট্রিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উপলক্ষে গৃহীত কার্যক্রমের শুরু হয়। এরপর দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সকাল ১০টায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে একটি অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া ও স্লোভাকিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা, সাংবাদিক, ছাত্র এবং অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। আলোচনার শুরুতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণীসমূহ প্রচার ও পাঠ করা হয়। এরপর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাঠানো ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মিশনের উপ-প্রধান রাহাত বিন জামান।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, স্বাধীনতা সংগ্রামে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য।
বক্তারা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার বিভিন্ন পর্যায়ের আন্দোলন-সংগ্রাম, পরবর্তীকালে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের নেতৃত্ব এবং স্বাধীনতাত্তোর দেশ পুনর্গঠন ও জাতির সেবায় বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং আত্মত্যাগ সম্পর্কে সারগর্ভ আলোচনা করেন। বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের সম্মানসূচক কাতারে অন্তর্ভুক্তিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ও ভবিষ্যতে আরও সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ও মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মের শতবছরের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হতে পেরেছি। যারা বাংলাদেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি বা ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছিল তাদেরকে মিথ্যে প্রমাণ করে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেলই নয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ণে আমরা বহু দেশকে পিছনে ফেলে অনেকদূর এগিয়ে গেছি। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে এই অর্জন অনেক আনন্দের, গৌরবের।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে যেন স্বাধীনতার প্লাটিনাম জয়ন্তীতে আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে উপহার দিতে পারি একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ- আজকের দিনে এই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ।
আলোচনা শেষে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সকল শহীদ, জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এআরএ