‘ভয়ভীতি প্রদর্শন বা হামলা করে কোনো ছাত্র আন্দোলন দমানো যায়নি’

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) রোববার (১৬ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় বইছে। অনেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তুমুল সমালোচনা করছেন।
এ বিষয়ে রোববার রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন সিলেটের প্রবীণ রাজনীতিক ও আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন বা হামলা করে কোনো ছাত্র আন্দোলন দমানো যায়নি কখনো, আলোচনার মাধ্যমে এসব ঘটনার সমাধান খুব সহজেই সম্ভব ছিল। আজ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই, সব পক্ষকে সহনশীলতা প্রদর্শনের অনুরোধ করছি, আহত ছাত্রদের সঠিক সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হোক।’
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, হলের অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কদিন ধরে উত্তপ্ত শাবিপ্রবি।
১৬ জানুয়ারি চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে বিকেলের পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ক্যাম্পাস। দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা ভবনের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেন। তখন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের তালা খুলে দিতে বলেন। জবাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাটিচার্জ শুরু করলে তারাও পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। প্রায় ২৫ মিনিট উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীরা সরে গেলে তালা ভেঙে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর উপাচার্যকে উদ্ধার করে পুলিশ তার বাসভবনে নিয়ে যায়। এর আধাঘণ্টা পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
আগের দাবির সঙ্গে এখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগও চাইছেন। তার সোমবার সকাল থেকে আন্দোলন করছেন ক্যাম্পাসে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাস না ছাড়তে অনড় রয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এইচএ/এমএস