তামিমের ফিফটি, রিয়াদ-শেহজাদের ঝড়ে ঢাকার চ্যালেঞ্জিং স্কোর

দিনের প্রথম ম্যাচে রান তুলতে বেগ পেয়েছে দুই দলই। অবস্থা বদলালো দ্বিতীয় ম্যাচে। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ঝড় তুললেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ শেহজাদরা; রয়ে-সয়ে খেলে আসরের প্রথম ফিফটি করলেন তামিম ইকবাল। তিন অভিজ্ঞ ব্যাটারে ভর করে ৬ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে মিনিস্টার ঢাকা।
তামিম ইকবালের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ৮.১ ওভারে ৬৯ রান যোগ করেন শাহজাদ। যেখানে আফগান তারকার একার অবদান ২৭ বলে ৪২ রান। আসরের প্রথম ফিফটিতে তামিম করেছেন ৪২ বলে ঠিক ৫০ রান। আর শেষ দিকে ঝড় তুলে অধিনায়ক রিয়াদ খেলেন ২০ বলে ৩৯ রানের ইনিংস।
শিশিরের কথা মাথায় রেখে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন খুলনার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার সিদ্ধান্তের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি খুলনার বোলাররা। শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন শাহজাদ। অপর প্রান্তে রয়ে-সয়ে উইকেট বাঁচিয়ে খেলছিলেন তামিম।
শেখ মেহেদির করা ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন শাহজাদ। মেহেদির পরের ওভারে টানা তিন চার মারেন আফগান তারকা ওপেনার। ফরহাদ রেজার করা পাওয়ার প্লে'র শেষ ওভারে আরও দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে প্রথম ছয় ওভার থেকে ঢাকার সংগ্রহ ৫৬ রানে পৌঁছে দেন শেহজাদ।
তবে তার ইনিংসের সমাপ্তিটা ঘটে দূর্ভাগ্যজনক এক রানআউটে। ইনিংসের নবম ওভারের প্রথম বলে সরাসরি থ্রোয়ে আউট হন শেহজাদ। ডিপ স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়েই দুই রানের জন্য ছুটেছিলেন তামিম, খানিক ধীরে দৌড়াচ্ছিলেন শেহজাদ। সুযোগ বুঝে বাউন্ডারি থেকে থ্রো করে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন তানজিদ হাসান তামিম, ফলে বিদায়ঘণ্টা বাজে ২৭ বলে ৪২ রান করা শাহজাদের।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর হাত খোলেন তামিম। ফরহাদ রেজার করা ১১তম ওভারে পরপর তিন বলে তিন চার মারেন দেশসেরা ওপেনার। এক ওভার পর মুখোমুখি ৪১তম বলে নিজের ক্যারিয়ারের ৪১তম ফিফটি পূরণ করেন তামিম। কিন্তু এরপর আর বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি।
ইনিংসের ১৪তম ওভারের প্রথম বলে ডিপ মিড উইকেটে নাভিন-উল হকের দারুণ এক ক্যাচে সাজঘরে ফিরতে হয় ৫০ রান করা তামিমকে। হতাশ করেন তিন নম্বরে নামা নাইম শেখ। ইনিংসের ১৫তম ওভারে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৯ রান করেন তিনি।
তামিম আউট হওয়ার পর উইকেটে এসেই প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন মারকুটে ব্যাটার আন্দ্রে রাসেলও। থিসারা পেরেরার করা ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে কাউ কর্নার দিয়ে বিশাল এক ছক্কা হাঁকান এ ক্যারিবীয় তারকা।
কিন্তু পরের বলেই অদ্ভূতুড়ে এক রানআউট হন রাসেল। মিডল স্ট্যাম্পে থাকা স্লোয়ার ডেলিভারিটি থার্ড ম্যানের দিকে ঠেলে দিয়ে কুইক সিঙ্গেলের জন্য দৌড় দেন রাসেল ও রিয়াদ। থার্ডম্যানে দাঁড়ানো মেহেদি বল ধরেই থ্রো করেন স্ট্রাইক প্রান্তে, যা ভেঙে দেয় স্ট্যাম্প। মাহমুদউল্লাহ পপিং ক্রিজে ঢুকে যাওয়ায় বেঁচে যান।
তবে স্ট্রাইক প্রান্তে স্ট্যাম্প ভাঙার পর সেই বলই আবার আঘাত হানে নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্ট্যাম্পে। কিন্তু তার আগে পপিং ক্রিজে ঢুকতে পারেননি রাসেল। অপরপ্রান্তে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিজের উইকেটই হারিয়ে বসেন তিনি। আর এক থ্রোয়ে দুই স্ট্যাম্প ভেঙে বিরল রানআউটের জন্ম দেন মেহেদি।
রাসেল মাত্র ৭ রান করে আউট হলেও ঢাকার বড় সংগ্রহ পেতে সমস্যা হয়নি অধিনায়কের চওড়া ব্যাটের কল্যাণে। নবীন উল হকের ১৯তম ওভারে জোড়া ছক্কা হাঁকান রিয়াদ। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে হাঁকান একটি করে চার ও ছক্কা।
পরপর তৃতীয় বাউন্ডারি মারতে গিয়ে মিড উইকেটে তানজিদ তামিমের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন রিয়াদ। তার ব্যাট থেকে আসে দুই চার ও তিন ছয়ের মারে ২০ বলে ৩৯ রান। ইনিংসের একদম শেষ বলে হাঁকানো বাউন্ডারিতে দলীয় সংগ্রহ ১৮৩ রানে নিয়ে যান ইসুরু উদানা। অন্য প্রান্তে শুভাগত হোম অপরাজিত থাকেন ৪ বলে ৯ রানে।
খুলনার পক্ষে কামরুল রাব্বি ৩ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে খরচ করেন ৪৫ রান। আরেক পেসার থিসারা পেরেরা ২৭ রানে নেন একটি উইকেট।
এসএএস/আইএইচএস/