করোনার কারণে শখের গাড়িটাও বিক্রি করে দিচ্ছেন ভারতীয় খেলোয়াড়
অ্যাথলেটিক্সের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে সর্বভারতে রেকর্ডধারী স্প্রিন্টার দ্যুতি চাঁদ। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে রেকর্ড সৃষ্টিকারী এই নারী অ্যাথলেট দুই বছর আগে শখ করে কিনেছিলেন একটি বিএমডব্লিউ। খরচ পড়েছিল ৩০ লাখ রুপি। গাড়িটি তার অনেক প্রিয়। যে কারণে প্রিয় গাড়ির সঙ্গে অনেক ছবিও পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কিন্তু করোনার কারণে অসহায় হয়ে পড়া দ্যুতি চাঁদ অবশেষে নিজের শখের গাড়িটাকেই বিক্রি করে দিতে যাচ্ছেন। গাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। শনিবার নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে দ্যুতি চাঁদ লিখেন, ‘আমি আমার বিএমডব্লিউ গাড়িটা বিক্রি করতে চাই। কেউ যদি কিনতে আগ্রহী হন, তাহলে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করুন।’
স্থগিত হয়ে যাওয়া টোকিও অলিম্পিক নিয়ে পরিশ্রমে কোনো ত্রুটি রাখতে চান না দ্যুতি। যদিও এখনও তার জায়গা নিশ্চিত নয়। তবে, করোনার কারণে স্পন্সর হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। দীর্ঘদিন খেলাধুলা বন্ধ থাকায় কোনো স্পন্সরই সাহস করে এগিয়ে আসছে না।
এমন পরিস্থিতিতে অর্থের অভাব যেন কোনোভাবেই তার প্রশিক্ষণে প্রভাব না ফেলে। সে কারণেই মূলতঃ গাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতীয় তারকা অ্যাথলেট।
দ্যুতি বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে সব ধরনের প্রতিযোগিতা বাতিল হয়ে গেছে। অলিম্পিকের স্পন্সরশিপও নেই। গত কয়েক মাসে জমানো অর্থ শুধু খরচই হয়েছে। আয় কিছুই হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নতুন কোনো স্পন্সরও জুটবে না। তাই হাতে একটাই উপায়। গাড়িটা বিক্রি করে দেওয়া।’
র্যাডিফ ডটকমকে তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে গাড়িটা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত জানানোটা ছিল আসলেই কঠিন। যদি এবার অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হতো, তাহলে সব কিছুই ঠিক থাকতো। কিন্তু এবারের অলিম্পিক এক বছর পিছিয়ে যাওয়ার কারণে সব এলোমেলো হয়ে গেলো।’
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সবুজ সংকেত দেখালেও এখনও অ্যাথলেটদের মাঠে নেমে অনুশীলনের অনুমতি দেয়নি ফেডারেশন। ফলে ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও কোনো সাহায্য পাচ্ছেন না দ্যুতি। এছাড়া অলিম্পিকের দিনক্ষণ এক বছর পিছিয়ে যাওয়ায় স্পনসররাও ইতোমধ্যে তাদের খরচ কমিয়ে ফেলেছে। একটি স্পনসরের সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদ রয়েছে এ বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে নতুন করে আর স্পন্সর মেলা বেশ কঠিন। এ কারণে গাড়ি বিক্রি ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই দ্যুতির সামনে।
সম্প্রতি অর্জুন পুরষ্কারের জন্য ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে এশিয়ান গেমসে জোড়া পদকজয়ী এই স্প্রিন্টারকে। যা তাকে দেশের হয়ে আরও পদক জয়ে উদ্বুদ্ধ করছে। সুতরাং, সাধের গাড়ি বিক্রির চাপা কষ্ট লুকিয়ে রেখেই দ্যুতি বলছেন, ‘না, খারাপ লাগছে না। প্রতিযোগিতা ছিল বলেই গাড়িটা কিনতে পেরেছিলাম। আবার যখন খেলব, উপার্জন করব আর নিজের জন্য দামী গাড়ি কিনব। সুতরাং, আপাতত ওসব চিন্তা না করে অলিম্পিকেই ফোকাস করছি।’
আইএইচএস/