মেশিনগান তুলে অনবরত গু লি ছুঁড়েন শত্রুদের লক্ষ্য করে

০৫:৩৬ এএম, ০৩ এপ্রিল ২০২৩

১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে উত্তাল সারাদেশ। যুদ্ধ শুরু হয়েছে পুরোদমে। ঝিকঝিক করছিল রাঙামাটির সবুজ পাহাড় ঘেরা কাপ্তাই হ্রদের শান্ত নীল জলরাশি। ঠিক তখনই হঠাৎ শত্রু বাহিনীর কামান ও মর্টারের আওয়াজ গর্জে ওঠে। গর্জনে প্রকম্পিত হচ্ছিল শান্ত পাহাড়ি জনপদ। সেখানে শত্রুপক্ষের গতিবিধি নির্ণয়ে মেশিনগানার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন তৎকালীন অষ্টম ইষ্ট বেঙ্গল ও ইপিআরের সদস্য ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ।
সম্মুখযুদ্ধে সেদিন মুন্সী আবদুর রউফ নিজের মেশিনগান তুলে ধরে অনবরত গুলি ছুঁড়তে লাগেন সরাসরি শত্রুদের বোট লক্ষ্য করে। তার অসীম সাহস ও মেশিনগানের প্রবল গোলার আঘাতে শত্রু পক্ষের ২টি লঞ্চ ও একটি স্পিডবোটসহ দুই প্লার্টুন শত্রু সৈন্যের সলিল সমাধি হয়। বাকি দুই প্লার্টুন সৈন্য দ্রুত পিছু হটতে থাকে এবং মুন্সী আব্দুর রউফের ওপর লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করে। এতে হঠাৎ পাক হানাদারদের একটি মর্টারের গোলা তার ওপর আঘাত করলে সেখানেই ল্যান্স নায়েক মুন্সী আবদুর রউফ শাহাদাৎ বরণ করেন।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৩ সালের ১ মে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার সালামতপুর গ্রামে। তিনি ১৯৬৩ সালের ৮ মে তৎকালীন ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস-এ সৈনিক পদে যোগদান করেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান “বীর শ্রেষ্ঠ” উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের অন্যতম।