সাহিত্য

উম্মে মাহবুবা ইমার দুটি কবিতা

তারিখগুলো যাকে খুঁজে ফেরে

জানুয়ারির হাওয়া কাঁপে,অসুস্থতা যেন বসন্ত হরণ করে,বুকের ভেতর এক নিবিড় আশঙ্কা—আপনি ফিরবেন তো?

ফেব্রুয়ারি-মার্চের নীরবদিনগুলোয় জেগে উঠেছিলএক কোমল আভা—আপনি নিশ্চয়ই সুস্থ আছেন।এই বিশ্বাসেই প্রতিটি দিন আলো ছড়াতো নিঃশব্দ প্রার্থনার দীপ্তিময়তায়।

এপ্রিল এলো, উৎসব এলো,নববর্ষের সুর বাজলো দিগন্তজুড়ে।তবুও এক অপূর্ণতা ছায়া ফেললো মনজুড়ে—

কারণ আপনি ছিলেন না। তবুআপনার অভাব ছিল ঘরে ঘরে,ঠিক যেন জীবনানন্দেরসন্ধ্যার নদীর মতো শান্ত,কিন্তু একফোঁটা বিষণ্নতায় ডুবে থাকা।

মে মাসে আপনার জন্মদিন—একটি নীরব প্রার্থনার মতোহৃদয় থেকে উৎসারিত শুভ কামনা,এই দিন ফিরে আসুক শত-সহস্রবার,আর আপনার হাসি ছড়িয়ে যাকপৃথিবীর সমস্ত আলো ছাপিয়ে।

১৩ মে...৭৩ দিনের দীর্ঘ প্রতীক্ষার শেষেআপনি ফিরে এলেন।আর সঙ্গে বয়ে আনলেনপৃথিবীর অপার দীপ্তি।

জুন-জুলাই জুড়ে ছিল একটাই প্রশ্ন—আপনি কবে আসবেন?হঠাৎ জানি, ২৬ জুলাই থেকে ক্লাস!কী অপার্থিব আনন্দ, আকাশের রঙেও জ্বলছিল তার প্রতিধ্বনি।

তারপর ২৭ জুলাই আমি এসেছিলাম,একটু দেখবো বলে,আপনার টেবিলের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম চুপচাপ।কিন্তু অফিসের কাজে নিয়োজিত একজন জানালেন—আপনি আসবেন না। একটুখানি থেমেছিল সময় তখনই,হয়তো আবার এক বছরপিছিয়ে গেল দিনপঞ্জি...

তারপর আবার এক অন্ধকারনেমে এলো আকাশজুড়ে, আপনার জন্য রাখা দিনপঞ্জিকাটির পাতা উল্টে দেবে বলে।

****

হে জীবন তোমায় কী বলি

হে জীবনতোমায় কী বলি,সুরের আবেশে কি কি করেছো তুমি?আশার প্রদীপ যেখানে নিভে গেছে,এমন নগরীতে আমায় নিয়ে গেলে তুমি। থামিয়ে দিলে আমার শত প্রত্যাশিত দিনপঞ্জি,হে জীবন, তোমায় কী বলি।

থেমে গেছি আমিবড় হই না তবু,চোখের ভাষা বোঝে না কেউ আর কভু।হৃদয়টা নীরব, কথারা খোঁজে কথা আর কাগজে। অনুপস্থিতি তার শেকড়ে শাখায় মেঘে।

কী বলব হে জীবন,তবু তোমায় বলি, কী কী করেছো তুমি।

এসইউ/জেআইএম