সোশ্যাল মিডিয়া

হাসিনার ফাঁসির রায়ে মীর কাসেম আলীর মেয়ের আবেগঘন প্রতিক্রিয়া

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া মীর কাসেম আলীর মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন গভীর বেদনাভরা প্রতিক্রিয়া। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায়কে কেন্দ্র করে নিজের অতীত যন্ত্রণা, পারিবারিক ভাঙন এবং বিচারপ্রক্রিয়ার তুলনামূলক বৈষম্য নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন তিনি।

ফেসবুক স্টাটাসে রাবেয়া জানান, তার বাবার (মীর কাসেম আলী) রায় ঘোষণার দিন তিনি ছিলেন প্রথম সন্তানসম্ভবা—জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা। কিন্তু সেই সময়ই ঘিরে ধরেছিল ভয় ও আতঙ্ক। পুলিশের ধারাবাহিক রেইডে দুই পরিবারই ছিল বিধ্বস্ত, ভাইয়েরা আত্মগোপনে, আর ঘরে একমাত্র সান্ত্বনা ছিল তার মা হওয়ার খবর।

তিনি লেখেন, বাবার রায় ঘোষণার দিন আরমান খানের মতো ঘনিষ্ঠজনরা জেলগেটে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। বাবাকে কনডেমড সেলে নেওয়ার দৃশ্য, আরমানের অসহায় কান্না—সবই তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে। অতিরিক্ত শোক, চাপ এবং গর্ভাবস্থার জটিলতায় তিনি হারান তার অনাগত সন্তানকেও।

রাবেয়া উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর অনেকটাই ছিল ‘অযৌক্তিক’, কারণ ‘১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল মাত্র ১৯’।

তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ফাঁসি হবে না, অন্তত আজীবন হলেও বাবাকে দেখতে পাবো। কিন্তু আমাদের সামান্য আশাটুকুও মুছে গেল সেই রায়ে।’

হাসিনার রায়কে ঘিরে তীব্র ক্ষোভ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষের চোখের সামনেই অনেক ঘটনা ঘটেছে, তাই এই রায় স্পষ্ট ও ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু এরপরও তার ক্ষোভ আছে একটি বিষয় নিয়ে।

তার ভাষায়, ‘এতকিছু ঘটার পরও তার জন্য কোনো কনডেমড সেল নেই। তিনি আরামে এসি রুমে বসে হাসছেন। তাকে কনডেমড সেলে না দেখা পর্যন্ত এই রায় আমার কাছে অপূর্ণ।’

তিনি মনে করেন, যত ফাঁসির আদেশই কার্যকর হোক, এত মানুষের শোক-দুঃখের বোঝা কখনোই পূরণ হবে না।

এসইউজে/এমএমকে