দরজায় কড়া নাড়ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ‘সিনিয়র অফিসার’ পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। আগামী ৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রিলিমিনারি এবং ১৯ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার প্রধান বাধা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা এবং চাকরি নিশ্চিত করবে লিখিত পরীক্ষা। তাই চাকরি নিশ্চিত করতে প্রিলিমিনারি এবং লিখিতের সমন্বিত প্রস্তুতির বিকল্প নেই। ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপসহকারী পরিচালক মো. তাশরিফুল ইসলাম—
১. প্রতিদিন একটি করে বাংলা এবং ইংরেজি ফোকাস রাইটিং খাতায় লিখে প্র্যাকটিস করতে পারেন। পরীক্ষার হলের সমান সময় নিয়ে রিসেন্ট টপিকে বাসায় বসে চর্চা করতে পারেন।
২. প্রতিদিন এক ঘণ্টা জব সল্যুশন পড়া উচিত। যেখানে বিসিএস ৩৫তম থেকে ৪৯তম পর্যন্ত এবং সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ব্যাংক পরীক্ষার প্রশ্ন দেখতে পারেন।
৩. সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান পড়বেন। এ ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞানের জনপ্রিয় একটি বই দেখতে পারেন।
৪. বিগত ব্যাংক ভোকাব্যুলারি প্রতিদিন একটু একটু করে পড়বেন। সাধারণত বিগত থেকে প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি হয়ে থাকে। তাই এখানে জোর দিন।
>> ইংরেজির জন্য যেসব টপিক থেকে বারবার প্রশ্ন হয় এবং যেসব টপিকে আপনার দুর্বলতা আছে; সেসব টপিকের নিয়মগুলো একটু চর্চা করে রাখবেন।
>> ইংরেজি সাহিত্যের জন্য প্রাসঙ্গিক কয়েকজন কবি-সাহিত্যিকের কর্মকে প্রাধান্য দিন।
>> ওয়ান ওয়ার্ড সাবস্টিটিউশন, এনালজি, অড ম্যান আউট—এ ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি অনেক ওয়েবসাইট আছে। যেগুলো পরিচিত; সেগুলা থেকে ট্রাই করে দেখতে পারেন।
৫. একটি সুন্দর আরগুমেন্টে রাইটিং ফরম্যাট রেডি রাখুন এবং সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন এই ফরম্যাট অনুযায়ী পরীক্ষার হলের সমান সময় নিয়ে বাসায় প্র্যাকটিস করুন।
৬. প্রতিদিন ইংরেজি পত্রিকা থেকে বাংলা এবং বাংলা পত্রিকা থেকে ইংরেজি একটু একটু করে অনুবাদ প্র্যাকটিস করুন। এটি আপনার লিখিত অনুবাদকে এগিয়ে দেবে।
৭. প্রতিদিন একটি জব সল্যুশন থেকে প্রিলিমিনারি এবং লিখিত গণিত প্র্যাকটিস করুন।
>> গণিতের যে বিষয়গুলো বারবার ভুল হয় কিংবা যেসব সূত্র এবং অনুসিদ্ধান্ত ভুলে যান, তা চর্চা করুন এবং আপনার নোটবুকে লিখে রাখুন।
>> লিখিত গণিতের জন্য পুরো অঙ্ক খাতায় লিখে করবেন। না হলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
৮. যেসব বিষয় বারবার ভুলে যান; সেগুলো একটি খাতায় বা নোটবুকে লিখে রাখুন এবং পরীক্ষার আগের দিন রাতে বা পরীক্ষার দিন সকালে তা একনজর দেখে যাবেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পেতে যেভাবে প্রস্তুতি নেবেন বিদেশে পড়তে যাওয়ার পর যেসব বিষয় জানা জরুরি
৯. বাংলার জন্য ব্যাকরণকে বেশি প্রাধান্য দেবেন।
>> ব্যাকরণের যেসব টপিক থেকে বেশি প্রশ্ন আসে; সেগুলো আগে এবং বারবার পড়ার চেষ্টা করুন। এ ক্ষেত্রে বাজারের ভালো বইটি সহায়ক হতে পারে।
>> সাহিত্যের ক্ষেত্রে সময়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ সাহিত্যিকদের কর্ম দেখে যাবেন। এখানে যে কোনো বই থেকে সমকালীন মুসলিম সাহিত্যিক ফোকাস করে তাদের কর্ম পড়লে বেশি লাভবান হবেন।
১০. কম্পিউটার অংশে সম্প্রতি অনেক গভীর থেকে প্রিলিমিনারি প্রশ্ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিগত সব প্রশ্ন এবং ভালো বইয়ের কম্পিউটার অংশটা দেখে নিতে পারেন। এটি আপনাকে এক্সট্রা কনফিডেন্স দেবে।
>> যারা আরও বিস্তারিত পড়তে চান; তারা বাজারের জনপ্রিয় বইটি দেখতে পারেন।
১১. আপনার সৃষ্টিকর্তার প্রতি অনুগত থাকুন, ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করুন। এটি আপনাকে মানসিকভাবে আত্মবিশ্বাসী রাখবে।
এ সময়ে যা করবেন না
১. বিচলিত হবেন না। মানসিকভাবে স্থির থাকুন। আপনার রিজিক যেখানে নির্ধারিত আছে; আপনি সেখানে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও পৌঁছাবেন, এটি মাথায় রাখুন।
২. সব বিষয়ের সব টপিক পড়ে ফেলার মতো মানসিকতা রাখবেন না। যেখানে যেখানে দুর্বলতা আছে; সেখানে হিট করার চেষ্টা করুন।
৩. নিজেকে অযোগ্য ভাববেন না। নিজের সক্ষমতা জাজ করার চেষ্টা করুন। এটি আপনাকে অনেকদূর এগিয়ে দেবে।
৪. নেগেটিভিটি এড়িয়ে চলুন, মানসিকভাবে পজিটিভ থাকুন। মাইন্ডগেমে হেরে গেলে আপনি এমনি পিছিয়ে যাবেন।
৫. পরীক্ষার হলে শান্ত থাকার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত নেগেটিভ মার্ক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
৬. পরীক্ষার হলে গণিত অংশ সবশেষে দাগানোর চেষ্টা করবেন। গণিত ছাড়া বাকি অংশ যত দ্রুত সম্ভব মার্ক করে ফেলবেন।
৭. লিখিত পরীক্ষায় সিরিয়ালি লেখার চেষ্টা করবেন এবং সব প্রশ্নের উত্তর টাচ করে আসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। এ ক্ষেত্রে গণিত করতে গিয়ে বেশি সময়ক্ষেপণ আপনাকে পিছিয়ে দিতে পারে।
এসইউ