দেশজুড়ে

পাবনায় পেঁয়াজের দাম কমলো কেজিতে ৪০ টাকা

পাবনায় কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে অন্তত ৪০ টাকা। জেলার বিভিন্ন বাজারে পুরোনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। আর মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) জেলার বড় বাজার, মাসুম বাজার ও লাইব্রেরি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে বাজারে পুরোনো পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ টাকা ও মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২০ টাকা পর্যন্ত।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুক্রবারের আগে পাবনার বাজারগুলোতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দর স্বাভাবিক ছিল। পুরনো পেঁয়াজের প্রতি কেজি খুচরা বাজার ছিল ১১০-১২০ টাকা। বৃহস্পতিবারও বাজার অনেকটা একই থাকলেও শুক্রবার হঠাৎ বাজার বেড়ে পেঁয়াজের দর ওঠে ১৪০ টাকায়। কোনো কোনো জায়গায় ১৫০ টাকাতেও বিক্রি হয়েছে। এরপর দিন আবার দর অনেকটা কমে যায়।

শনি ও রোববার বাজার ছিল ১১৫-১২৫ টাকা। তবে আমদানির খবরে দর আরও কমে সোমবার বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। ১২০ টাকার মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। তবে আমদানির প্রভাবে অতিরিক্ত দরপতন হলে চাষিরা লোকসানে পড়বে।

বড় বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শহিদুল্লাহ শেখ বলেন, পাবনায় শুধু শুক্রবারে পেঁয়াজের বাজার অতিরিক্ত ছিল। এরপর দিন সকালে বাজার কমেছে। ১৪০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয়েছে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা। এতে আমরা ছোট ব্যবসায়ীরা লোকসান পড়েছি। এভাবে হুটহাট বাজার ওঠানামা না হওয়া ভালো। দাম যেনো স্বাভাবিক থাকে আমরা সেটাই চাই। কারণ যে দামে বিক্রি করি আমাদের ওই একই লাভ।

আরেক ব্যবসায়ী মকবুল বলেন, এখন মুড়ি কাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। আজ ব্যাপক উঠেছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করছে। কৃষকের কথা মাথায় রেখে যেনো এ কম বা বেশি হয়। কারণ এ কয়দিনে যেভাবে দাম কমেছে, এভাবে কমতে থাকলে বাজার একেবারে পড়ে যাবে। এক্ষেত্রে কৃষকরা লোকসানে পড়বে। ২৫০০ টাকা মণ প্রতি দর পেলে কৃষকরা লাভবান হবে। তাহলে তারা আবাদ ও উৎপাদনও বাড়াবে। এদিকে ভোক্তাও সহনীয় দামে কিনে খেতে পারবেন। তাই এসব কিছু বিবেচনায় রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একমত পোষণ করছেন অধিকাংশ ক্রেতা। বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করে কৃষকদের বাঁচিয়ে সহনীয় দাম নির্ধারণের দাবি তাদের। ক্রেতা রাইসুল ইসলাম বলেন, বাজারে শৃঙ্খলা কখনো দেখা যায় না। একদিনে বাজার অস্বাভাবিক হারে বাড়লো। আবার আমদানির খবরে একইভাবে কমলো। কম থেকে দামটা যেনো সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেটি আমরা চাই। ৫০ টাকার মধ্যে দাম থাকলে ভোক্তা ও কৃষক উভয়েই বাঁচবে।

এদিকে কৃষকরা বলছেন, গত বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদে বিঘায় প্রতি কেউ কেউ ৭০-৮০ হাজার টাকাও লোকসান গুনেছে। তাদের দাবি, বাজারে ওঠার সময়ই বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় বাজার একেবারে কমে যায়। এতে লোকসানে পড়ে কৃষক। এক্ষেত্রে কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় রেখে আমদানি ও বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি তাদের।

এ ব্যাপারে পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. রাফিউল ইসলাম বলেন, বাজার স্বাভাবিক রাখতে সীমিত পরিসরে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের চিন্তার কারণ নেই। এবার তাদের আবাদ ব্যয় কম পড়েছে। সবমিলিয়ে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা মণ দর পেলে তারা অনেক লাভবান হবেন। আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছি।

আলমগীর হোসাইন নাবিল/আরএইচ/জেআইএম