আইন-আদালত

হানিফ মামলায় ‘ক্যামেরা ট্রায়ালে’ প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি সম্পন্ন

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ঘিরে কুষ্টিয়ায় ছয়জন হত্যার অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এটি ‘ক্যামেরা ট্রায়াল’র মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এটিই প্রথম কোনো জবানবন্দি, যা ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো। ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষী গ্রহণ শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন-বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ক্যামেরা ট্রায়ালে শুধু আইনজীবী, আসামি ও সাক্ষী ছাড়া কেউ উপস্থিত থাকেন না। সেভাবেই আজ এ সাক্ষী গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তাজুল ইসলাম বলেন, যারা এ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী হবেন, তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করার দায়িত্ব রাষ্ট্র ও আদালতের। সেই আঙ্গিকে কোনো সাক্ষীকে ভয়ভীতি যাতে না দেখানো যায়, তার পরিচিতি যাতে উন্মুক্ত হয়ে না পড়ে, ভবিষ্যতে যাতে অন্য কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে হুমকি বোধ না করেন, সে জন্যই এভাবে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

হানিফ ছাড়াও এ মামলার আসামি কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী ও কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।

গত ২ নভেম্বর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়। গণ-অভ্যুত্থানের সময় কুষ্টিয়া শহরে ছয়জনকে হত্যাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন এবং আজ সাক্ষী গ্রহণ শুরু হয়। আজ এ মামলায় ‘ক্যামেরা ট্রায়ালের’ মাধ্যমে প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হলো।

ক্যামেরা ট্রায়ালক্যামেরা ট্রায়ালে সাক্ষী গ্রহণ হচ্ছে, যেখানে বিচারকের সঙ্গে রুদ্ধদার পরিবেশে সাক্ষী ও দু’পক্ষের আইনজীবী ছাড়া কারো প্রবেশাধিকার থাকে না। বিশেষ করে সংবেদনশীল মামলা যেমন- নারী নির্যাতন, মানবপাচার, কিশোর অপরাধের ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবস্থা পরিচালনা করা হয়ে থাকে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিভিন্ন মামলায় ক্যামেরা ট্রায়ালে সাক্ষী গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাক্ষীর সুরক্ষার স্বার্থেও এ পদ্ধতিতে সাক্ষ্যগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে এ প্রথম কোনো সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে ক্যামেরা ট্রায়াল পদ্ধতিতে।

এফএইচ/এমএএইচ/এমএস