নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীর দিন সোমবার (৯ ডিসেম্বর) তাকে নিয়ে ফেসবুকে বিরূপ মন্তব্য করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান। নিজের স্ট্যাটাসে তিনি বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ ও ‘কাফির’ বলে আখ্যা দেন।
রাবির ওই শিক্ষকের মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিবৃতিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায়, এই বক্তব্য শুধু নিন্দনীয় নয়, নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ।
বিবৃতিতে আসক বলেছে, বাংলা ও বাঙালি নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনে অনন্য অবদান রেখেছেন। তাকে নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য সমাজে বিভাজন তৈরি করে এবং নারীবিদ্বেষী প্রবণতাকে উসকে দেয়।
একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে আসক আরও জানায়, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নৈতিকতা, শালীনতা ও প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা। দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ঘৃণাপ্রচারমূলক মন্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।
আসক মনে করে, এমন মন্তব্য মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি বিরোধী। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাকে অবমাননা করা মানে জাতির সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।
এ ঘটনায় রাবি শিক্ষক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
জেপিআই/এএমএ/এমএস