ইউরোপে থাকা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ অনির্দিষ্টকালের জন্য জব্দ রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষায় সহায়তা করতে বড় বাধা দূর হলো।
ইইউ ইউক্রেনকে অর্থায়ন অব্যাহত রাখতে এবং লড়াই চালিয়ে যেতে চায়, কারণ তারা রাশিয়ার আগ্রাসনকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। এ উদ্দেশ্যে, ২০২২ সালে মস্কোর ইউক্রেন আগ্রাসনের পর যে রুশ সার্বভৌম সম্পদগুলো তারা স্থগিত করেছিল, সেগুলোর একটি অংশ কাজে লাগাতে চায় ইইউ রাষ্ট্রগুলো।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ইইউ সরকারগুলো যে প্রথম বড় পদক্ষেপে সম্মত হয়েছে তা হলো ২১০ বিলিয়ন ইউরো (২৪৬ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের রুশ সার্বভৌম সম্পদ প্রয়োজন অনুযায়ী যতদিন দরকার ততদিন স্থগিত রাখা।
এর ফলে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো দেশগুলো—যাদের মস্কোর সঙ্গে অন্য ইইউ রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় ভালো সম্পর্ক রয়েছে—কোনো এক সময় জব্দের মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে—এই ঝুঁকি দূর হলো। তা না হলে ইইউকে ওই অর্থ রাশিয়াকে ফেরত দিতে হতো।
জব্দ করা রুশ অর্থ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে সর্বোচ্চ ১৬৫ বিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ দেওয়া হবে। এই অর্থ ২০২৬ ও ২০২৭ সালে ইউক্রেনের সামরিক ও বেসামরিক বাজেটের প্রয়োজন মেটাতে ব্যবহৃত হবে।
এই ঋণ ইউক্রেন তখনই পরিশোধ করবে, যখন রাশিয়া কিয়েভকে যুদ্ধক্ষতির ক্ষতিপূরণ দেবে। ফলে এই ঋণ কার্যত একটি অনুদানে পরিণত হবে।
এর আগে জার্মান সরকার জানায়, সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বার্লিন সফরে গিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরে তাদের সঙ্গে আরও ইউরোপীয়, ইইউ ও ন্যাটো নেতারাও যোগ দেবেন।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্বিরিদেনকো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইংরেজিতে লিখে এই সিদ্ধান্তকে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার পথে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসা করেন।
ইউরোপীয় কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, জার্মানি এই ক্ষতিপূরণভিত্তিক ঋণের কোনো বিকল্প দেখছে না এবং ৫০ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত গ্যারান্টি দিতে প্রস্তুত।
সূত্র: রয়টার্স
এমএসএম