দেশজুড়ে

নিহত সেনাসদস্য শামীম রেজার বাড়িতে শোকের মাতম

সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সেনাবাহিনীর সদস্য শামীম রেজা ওরফে শামীম ফকিরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রিয়জন হারানোর বেদনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা, স্ত্রী, স্বজনসহ পাড়া-প্রতিবেশী।

শামীম রেজা রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গী গ্রামের আলমগীর ফকিরের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামীম রেজা ছিলেন সবার বড়। পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছে শামীম ছিলেন অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শামীম রেজা ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদান করেন। কর্মজীবনের শুরু থেকে তিনি নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। চলতি বছরের ৭ নভেম্বর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে সুদানে যান। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন।

এদিকে শামীম রেজার মৃত্যুর খবরে পাড়া-প্রতিবেশী, স্বজন, জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা নিহত সেনাসদস্যের বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

তারা জানান, শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত অবস্থায় এক তরুণ সেনাসদস্যের এভাবে প্রাণ হারানোয় তারা মর্মাহত। দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে অন্য দেশে গিয়ে জীবন দেওয়া এরা জাতির গর্ব। তার আত্মত্যাগ যেন জাতি কখনো ভুলে না যায় এবং তারা যেন যথাযথভাবে সম্মান পায় এটাই তারা প্রত্যাশা করেন।

শামীম রেজার বাবা আলমগীর ফকির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ছেলেটার দেড় বছর আগে বিয়ে হয়েছে। এখনো তার কোনো সন্তান হয়নি। কত স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে। অন্তত শেষবারের মতো আমার ছেলের লাশটা দেখতে চাই।

নিহত সৈনিকের ছোট ভাই সোহান ফকির বলেন, গতকাল টেলিভিশনে সুদানের ঘটনার খবর দেখার পর থেকে আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। রাত ১২টার পর আমরা নিশ্চিত হই, ভাই আর নেই। গত শুক্রবার সে বাড়িতে ভিডিও কলে শেষবারের মতো কথা বলেছিল। ভাইয়ের লাশ চাই।

কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সেনাসদস্য শামীমের মৃত্যুর খবরে আমরা মর্মাহত। মরদেহ রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়ায় আসবে এবং আমরা আশা করছি দ্রুত তার মরদেহ দেশে আসবে।

রুবেলুর রহমান/আরএইচ/জেআইএম