লাইফস্টাইল

ডায়াবেটিস রোগীর নিরাপদ ভ্রমণের জন্য যা জানা দরকার

শীতকাল মানেই বছর শেষে একটু ঘোরাঘুরির মৌসুম। ভ্রমণ মানেই মানসিক স্বস্তি, পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সুযোগ। কিন্তু ডায়াবেটিস থাকলে অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে — প্রতিদিনের নিয়মকানুনের বাইরে ভ্রমণটা নিরাপদ হবে তো?

বাস, ট্রেন বা প্লেনে দীর্ঘ সময়, খাবারের অনিয়ম, ঘুমের ঘাটতি — সব মিলিয়ে রক্তে শর্করা ওঠানামার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বিষয় আগে থেকেই মাথায় রাখলে ডায়াবেটিস নিয়েও নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করা সম্ভব।

অনেকেই ভ্রমণের সময় ওষুধ নিতে ভুলে যান, খাবারের সময় এলোমেলো হয়ে যায় বা হঠাৎ দুর্বলতা অনুভব করেন। এমন সময় ছোট ভুলই বড় সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই ভ্রমণের আগে সামান্য পরিকল্পনাই পারে পুরো যাত্রাকে নিরাপদ রাখতে। সচেতনভাবে ভ্রমণ করলে মানসিক চাপ কমে, যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।

ভ্রমণে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

১. ওষুধ ও ইনসুলিন আগেভাগে প্রস্তুত রাখুনপ্রয়োজনের তুলনায় ২–৩ দিনের অতিরিক্ত ওষুধ সঙ্গে রাখুন। ইনসুলিন ব্যবহার করলে তা কখনোই লাগেজে নয়, হাতব্যাগে রাখুন।

২. খাবারের সময় একেবারে এলোমেলো করবেন নাভ্রমণের সময় খাবারের সময় পিছিয়ে গেলেও দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা ঠিক নয়। সঙ্গে বিস্কুট, বাদাম বা চিড়া রাখতে পারেন।

৩. পানি পান অবহেলা করবেন নাভ্রমণে ডিহাইড্রেশন হলে রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে। নিয়মিত পানি পান করুন, সফট ড্রিংক এড়িয়ে চলুন।

৪. রক্তে শর্করা মাপার যন্ত্র সঙ্গে রাখুনদীর্ঘ ভ্রমণে দিনে অন্তত একবার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করা নিরাপদ। হঠাৎ অসুস্থ লাগলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করুন।

৫. হাঁটাচলা ও বিশ্রামের ভারসাম্য রাখুনদীর্ঘ সময় বসে থাকলে সুযোগ পেলে একটু হাঁটুন। আবার অতিরিক্ত হাঁটাচলাও একসঙ্গে করবেন না।

৬. জুতা ও পায়ের যত্ন নিনআরামদায়ক জুতা পরুন। পায়ে কাটা-ছেঁড়া হলে অবহেলা করবেন না, কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষত শুকাতে সময় লাগে।

৭. ভ্রমণসঙ্গীদের জানিয়ে রাখুনযাদের সঙ্গে ভ্রমণ করছেন, তাদের ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানিয়ে রাখুন। জরুরি পরিস্থিতিতে এটি খুব কাজে আসে।

ভ্রমণ মানেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ভেঙে পড়বে—এই ধারণা ভুল। বরং সচেতনতা আর সামান্য পরিকল্পনাই পারে ভ্রমণকে নিরাপদ ও উপভোগ্য করে তুলতে।

সূত্র: আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, জার্নাল অব ট্রাভেল মেডিসিন

এএমপি/এএসএম