আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এ নিয়ে তফসিল ঘোষণার পরও জনগণের মধ্যে এখনো সংশয় রয়ে গেছে— নির্বাচন আদৌ হবে কি না। একটি স্বাধীন দেশের জন্য এ ধরনের অনিশ্চয়তা কোনোভাবেই শুভ লক্ষণ নয়।
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে আগে থেকেই স্পষ্ট বার্তা না দেওয়া এবং উপদেষ্টা পরিষদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য জনগণের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ গণতন্ত্র পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মহান বিজয় দিবস, জিয়াউর রহমান ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
দেশের স্বার্থ রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিএনপিই একমাত্র ভরসা।
আব্দুস সালাম বলেন, প্রতিটি জাতীয় সংকটে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ত্রাণকর্তা হিসেবে সামনে এসেছেন। তার পরবর্তী সময়ে বেগম খালেদা জিয়া এবং বর্তমানে তারেক রহমান সেই নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ধরে দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের মৌলিক অধিকার ছিল না। জনগণের পরিবর্তে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে জিজ্ঞেস করে ক্ষমতা নির্ধারণ করা হতো। এ কারণেই বিএনপি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছিল বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আবদুস সালাম বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের তোষণ করে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি শত উসকানির মধ্যেও শান্তি বজায় রাখছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৫ আগস্ট থেকেই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, নতুন বিনিয়োগ নেই, বেকারত্ব বেড়েছে, মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্তে পরিণত হচ্ছে। এই সংকট থেকে উত্তরণে আগে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি।
আব্দুস সালাম বলেন, জিয়াউর রহমানের নাম ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা যায় না। তিনি অল্প সময়ে কৃষি, শিল্প, শিক্ষা ও বৈদেশিক নীতিতে সংস্কার এনে দেশকে উন্নয়নের পথে দাঁড় করিয়েছিলেন। তারেক রহমান বর্তমানে দেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনার বিকল্প নেই। এজন্য আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে সত্য তুলে ধরতে সবাইকে মাঠে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যে মতবাদী প্রতিষ্ঠা করেন না কেন আগে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচনে যদি আপনারা বিজয়ী হতে পারেন। তাহলে আপনারা ইসলাম তন্ত্র বা সমাজতন্ত্র যে যেটা চান সেটা নিয়ে কাজ করতে পারেন।
বাংলাদেশ গণতন্ত্র পরিষদের সভাপতি মুক্তার অখন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সহ-স্থানীয় বিষয়ক সম্পাদক শামমী আখতার, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ নুর আফরোজ জ্যোতি, আব্দুর রহিম, জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলী এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
কেএইচ/এমএএইচ/