চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন হলুদের রাজত্ব। আগাম জাতের সরিষার ফুলে একের পর এক মাঠ ঢেকে গেছে উজ্জ্বল হলুদ আভায়। হিমেল হাওয়ায় দোল খাওয়া সরিষা ফুল প্রকৃতিতে ছড়িয়ে দিচ্ছে এক অপূর্ব নান্দনিকতা। এই মনোরম দৃশ্য মুগ্ধ করছে পথচারীসহ আগত সবাইকে, পাশাপাশি তৃপ্ত করছে কৃষকের হৃদয়ও।
সরিষা ফুলের এমন প্রাচুর্যে উৎফুল্ল কৃষকেরা, আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন সরিষা থেকে মধু সংগ্রহকারীরাও। গত কয়েক বছরে সরিষার ভালো ফলন ও সন্তোষজনক বাজারদর পাওয়ায় চলতি মৌসুমে আগের তুলনায় বেশি কৃষক সরিষা চাষে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মতলব উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে বারি সরিষা-৯, ১১, ১৪ ও ১৮ এবং বিনা সরিষা-৪ ও ৯সহ বিভিন্ন উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এলাকা ও উপজেলার চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে সরিষার চাষ হয়েছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে কেবল হলুদ আর হলুদ। এখানকার উৎপাদিত সরিষা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে আবাদ বৃদ্ধি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।
উপজেলার আধুরভিটি গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, এ বছর আমরা আগের তুলনায় অনেক বেশি সরিষা আবাদ করেছি। আবহাওয়া যদি এভাবেই অনুকূলে থাকে, তাহলে ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছি।
আরও পড়ুন:
আলু চাষে সারের গুরুত্ব এবং সংকটে করণীয় ফসলের নিরাপত্তায় কৃষকের পাশে ক্রপ ইন্স্যুরেন্স শীতকালে গবাদিপশুর যত্নে করণীয় কালো বোরো ধানে স্বপ্ন বুনছেন যমুনাপাড়ের চাষিরাচানখার বিলের কান্দি গ্রামের কৃষাণী আকলীমা বেগম বলেন, সরিষা চাষে রোপণ থেকে শুরু করে তেমন বাড়তি খরচ লাগে না। আমি এ বছর ৩৫ শতাংশ জমিতে এবং আমার ছোট ভাই কালাম ২৩ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। শুধু সার দিলেই হয়, আলাদা করে সেচও দিতে হয় না। তাই সরিষা চাষে আমরা ভালো লাভ পাচ্ছি।
সরিষার ক্ষেত থেকে মধু আহরণে যুক্ত দুলাল মিয়া বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সরিষার ক্ষেত অনেক বেশি। তাই এ বছর মধু উৎপাদনও বেশি হবে বলে আশা করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, সরিষা একটি স্বল্প খরচের লাভজনক ফসল। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় সরিষার আবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলন ভালো হলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবেন এবং ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শরীফুল ইসলাম/জেএস/